২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরীর শেষ পর্যায়ে শেবাচিম থেকে ডা.মাসুম বিল্লাহকে বদলি

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

শাহীন হাফিজ: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরির শেষ পর্যায়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রারকে বদলি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় শেবাচিম হাসপাতাল থেকে তাকে ভোলা জেলা হাসপাতালে বদলি করে ১৯ মে যোগদানের আদেশ দেন।

এতে শেষ পর্যায়ে মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এইচএম মাসুম বিল্লাহর করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। অথচ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ তার প্রোটকল রিসিভ করে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করে। শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডসহ মেডিসিন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন শেষে দিন-রাত পরিশ্রম করে গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। গত ১৪ মে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ থেকে ইথিক্যাল এপ্রোভাল’র অনুমোদনসহ অর্থ পাঠানোর চিঠি পেয়ে তার কাজের গতি আরও বেড়ে যায়। সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের অনুকূলে নিয়ম মাফিক ১৭ মে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা প্রেরণ করেন তিনি। ১৯ মে ওই বদলির আদেশ না আসলে ডিভাইস তৈরির কার্যক্রম শুরু হবার কথা ছিল চলতি সপ্তাহে। কিন্তু আকস্মিক তার এ বদলির আদেশে গত কয়েক দিন ধরে গবেষণা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রারকে ডা. এইচএম মাসুম বিল্লাহ এ গবেষণা কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই মেডিকেল কলেজ থেকে কিট সংকট দেখিয়ে তাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একান্ত সহযোগিতায় তার কাজ প্রায় সমাপ্তের পথে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কারো রোষানলে পড়ে মাসুম বিল্লাহকে বদলি করা হতে পারে। কেন না গবেষণা করা এ রেজিস্ট্রারকে এ সময়ে বদলির বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া তার গবেষণার কথা চিন্তা করে এ ধরনের আদেশে হাসপাতালের সকলেই হতবাক হয়েছেন। তার বদলির আদেশে এ ডিভাইস তৈরির কার্যক্রম থমকে যাবে। কেন না এ ধরনের গবেষণা সফল করতে এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের যে ধরনের হাসপাতাল ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন তা ভোলাতে নেই।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, ডা. মাসুম বিল্লাহ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরির কথা জানালে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়। এ ডিভাইস কার্যক্রম সফলভাবে সমাপ্ত হলে জনসাধারণের জন্য সুফল বয়ে আনবে। পাশাপাশি ডিভাইস তৈরিতে কর্মক্ষেত্রও তৈরি হবে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এইচ,এম মাসুম বিল্লাহ জানান, করোনা ভাইরাস শুরুর পর থেকেই রোস্টারের ভিত্তিতে তাকে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি একটি ডিভাইস তৈরির গবেষণা করতে শুরু করেন।

তার গবেষণা অনুযায়ী এ ডিভাইস ব্যবহারে করোনা আক্রান্ত রোগীর নিশ্বাসে নির্গত করোনা ভাইরাস, জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে। এ গবেষণার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্ধারিত করা হয়েছে। এ হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা ও ব্যবস্থাপনা গবেষণার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ইতিমধ্যেই ডিভাইসের নকশা বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে প্রেরণ করে তাদের চিঠির অনুকূলে ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগতভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, তার বদলিতে গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর বদলি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন প্রক্রিয়াধীন।

সূত্র: ইত্তেফাক

সর্বশেষ