২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
রাঙ্গাবালীতে মাটি কাটা কে কেন্দ্র করে মা ও দুই ছেলেকে মারধর হাসপাতালে ভর্তি সঞ্জিব দাস উজিরপুরে ট্রাক ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২ বরিশাল- পটুয়াখালী মহাসড়কে চেয়ারম্যান পরিবহন খাঁদে, নিরাপদে আছে যাত্রীরা চরমোনাই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মামুনের গনসংযোগ গাবতলীতে উঠান বৈঠককালে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সিটন ফুটপাতে জমে উঠছে ঈদ কেনাকাটা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গৌরনদীতে শিশুসহ ৪ সদস্যকে মারধর।। রোজার মাঝে রয়েছে আল্লাহর প্রতি সুদৃঢ় ঈমান রাখার সবিশেষ প্রশিক্ষণ —ছারছীনার পীর ছাহেব। গলাচিপায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গৃহবধূকে মারধর কলাপাড়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে খাল ভরাট

কলাপাড়ায় বানভাসি মানুষের উপজেলায় আসতে পার হতে হয় ৯ টি সাঁকো

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

ইমন আল আহসান .কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বেড়ীবাঁধ নিকটবর্তী গ্রামের মানুষগুলো অত্যান্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছে। জোয়ার ভাটার সাথে লড়াই করেই চলছে এখানকার মানুষের জীবন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি এসব এলাকায়। ৩ কি.মি. প্রধান একটি সড়কে রয়েছে ৯ টি বাঁশের সাঁকো। যথাযথ কর্তৃপক্ষ এসব অবহেলিত এলাকাগুলোর প্রতি সু-নজর দিবেন এমনটিই প্রত্যাশা করেন এখানকার খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতী বাজার হতে ৫ নং ওয়ার্ডের চারিপাড়া, নয়াকাটা ও চৌধুরীপাড়া গ্রামে যাওয়ার ৩ কি.মি. প্রধান সড়কটি একাধিক জায়গায় ভাঙ্গা রয়েছে। মাত্র ৩ কি.মি. রাস্তা অতিক্রম করতে ৯ টি বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। যা বর্তমান উন্নয়নমুখী সরকারের আমলে অবিশ্বাসযোগ্য একটি বিষয়। এছাড়াও এসব এলাকার বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন মানুষগুলো অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। জোয়ারের পানিতে ঘরে হাটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। তখন তাদের ঘরের চৌকির উপর বসেই রান্না ও খাওয়া-দাওয়াসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। রাতে ঘুমিয়ে থাকলেও আতঙ্ক কাজ করে কখন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে দেয়, কখন ঝড় এসে ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়। এসব আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মাঝেই কাটছে তাদের জীবন। রাস্তা-ঘাটগুলোও খুবই শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। ইটের রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ইট উঠে গিয়ে খানা-খন্দে ভরে গিয়েছে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা। অসুস্থ রোগী নিয়ে বিপাকে পরতে হচ্ছে স্বজনদের। এ যেনো সোনার দেশের মধ্যে অন্য একটি অন্ধকার দেশের কল্পকাহিনী। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে তবে এসব এলাকার উন্নয়নের প্রশ্নের সঠিক উত্তর যেনো জানা নেই কারোরই।
জানা যায়, ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চারিপাড়া, নয়াকাটা ও চৌধুরীপাড়া গ্রামে মোট ৮ শত পরিবারের বসবাস রয়েছে। তারমধ্যে স্বচ্ছল প্রায় দুইশত পরিবার অন্য ইউনিয়নে চলে যায়। এদেরমধ্যে নিতান্ত গরীব প্রায় দুইশত পরিবার বেড়িবাঁধের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষক ও জেলে। অথচ সরকার থেকে তেমন কোনো সাহায্য পাচ্ছে না বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। সর্বশেষ সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্পানে এসব এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এখন পর্যন্ত সরকার হতে তেমন কোনো সাহায্য পায়নি বলে জানান বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন অসহায় মানুষগুলো। তাই সংবাদকর্মীদের পেয়ে চাপা ক্ষোভে ফেঁপে ওঠেন তারা।

চারিপাড়া গ্রামের বেড়ীবাঁধের উপর বসবাসকারী আবুল হাওলাদারের স্ত্রী জেসমিন বেগম, শামসুল হক ফকিরের ছেলে সেলিম ফকির, মৃত মফিজ ফকিরের ছেলে আকবর ফকির ও মৃত ওয়াজেদ আলী হাওলাদারের ছেলে মহিউদ্দিন হাওলাদারসহ অনেকেই জানান, আমাদের ঘরবাড়ি নদীর ভাঙ্গনে ভেঙ্গে যাওয়ায় বেড়ীবাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছি। ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে আমাদের থাকতে হয়। অন্যত্র যাওয়ার কোন জায়গা নেই তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছিনা। সরকার আমাদের প্রতি একটু সু-নজর দিবে এটাই আমরা আশা করছি।

৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. রবিউল হাওলাদার বলেন, লালুয়া ইউনিয়নের মধ্যে আমার ওয়ার্ডটির অবস্থা খুবই শোচনীয়। একটি রাস্তায় ৯ টি বাঁশের সাঁকো যা অন্য কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। তারমধ্যে দু-একটি বাদে বাকি সাঁকোগুলোর অবস্থাও খুব খারাপ। অতি দ্রুত এগুলোর মেরামত করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, আমার ওয়ার্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোক অন্যত্র চলে গেছে। তাই যারা আছে তাদের সহায়তার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, আমার ইউনিয়নের সবগুলো ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ নং ওয়ার্ডটি খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন হওয়ায় এ ওয়ার্ডটি প্রায় বারো মাসই পানির নিচে তলিয়ে থাকে। তাই জোয়ার-ভাটার মধ্যেই এলাকার মানুষ বসবাস করে। তাই কোনো সহায়তা এলে তার বেশিরভাগই এসব এলাকায় দেয়ার চেষ্টা করি। খুব শীঘ্রই রাস্তার সাঁকোগুলো মেরামত করে দেবেন বলেও তিনি জানান।

সর্বশেষ