পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের কাউখালীতে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ৫২ বস্তা চাল জব্দ করেছেন প্রশাসন।
জানাযায়, ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা রক্ষায় ইলিশের অভয়াশ্রমে এপ্রিল- মে দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এসময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া জেলেদের এপ্রিল ও মে মাসের প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সে হিসেবে উপজেলার ১নং সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে গত মঙ্গলবার ও বুধবার চাল বিতরণ করেন জনপ্রতিনিধিরা। খাদ্য সহায়তার ওই চাল বিতরণ কালে জনপ্রতি ৮০ কেজির মধ্যে চার থেকে পাঁচ কেজি করে চাল কম দেওয়ায় হট্টগোল শুরু করে জেলেরা।পরে তারা বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসারকে জানালে তারা ট্যাগ অফিসারকে ঘটনা স্হলে পাঠান।ট্যাগ অফিসার এসে ৫২ বস্তায় ২৩ শ কেজি চাল মজুদ পাওয়া ওই চাল তিনি জব্দ করে জেলেদের তালিকা নিয়ে যান।
দুলাল মাঝি,কবির আকন,সাকায়েত নামের জেলেরা বলেন, আমরা সরকারের দেওয়া অভিযান মেনে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছি। মাছ না ধরার জন্য আমরা সন্তানদের নিয়ে খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। এরপর দুই মাসের ৮০ কেজির চালের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে ৭৪/৭৫ কেজি করে। চাল কম দেওয়ায় আমরা এর প্রতিবাদ করে উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসারকে জানান।
এবিষয়ে মৎস্যজীবি নেতা আব্দুল ওদুদ বলেন, জেলেদের অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী চাল বিতরণ না করে চেয়ারম্যান তালিকার বাইরেও চাল বিতরণ করেন। এর জন্য তালিকাভূক্ত অনেক জেলে চাল পায় নাই। এছাড়া জেলেদেরকে ৮০ কেজির পরিবর্তে ৭৫ কেজি করে চাল বিতরন করেন। তিনি এবিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসারকে জানালে তারা বিষয়টি সরজমিনে দেখার জন্য ট্যাগ অফিসারকে পাঠান।ট্যাগ অফিসার এসে পরিষদে জেলেদের চাল দেয়ার পরেও ৫২ বস্তায় ২৩শ কেজি চাল দেখতে পান।পর তিনি ওই চাল জব্দ করে জেলেদের তালিকা নিয়ে যান।
সয়না রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ অনিয়মের বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি বলেন, এখনও ১৯ জন জেলেকে চাল দেয়া হয়নি। তাদের চাল পরিষদে জমা রয়েছে এবং জনপ্রতি ৭৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ৩৫৮ জন সুবিধাভোগীর কাছ থেকে যে চাল রাখা হয়েছে তা পরিষদে মওজুদ আছে। বাড়তি চালের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে আগেই জানানো হয়েছে বলেও দাবী করেন চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমবায় ও ট্যাগ অফিসার হাসান রকি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তিনি চাল বিতরনের মাস্টার রোল ও ১ নং সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে থাকা ৫২ বস্তা চাল জব্দ করে চেয়ারম্যান,ইউপি সদস্য, চৌকিদার ও সচিবের কাছ থেকে লিখিত নিয়ে পরিষদে মওজুদ রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ খালেদা খাতুন রেখা বলেন, জেলেদের চাল কম দেয়ার বিষয়টি মৌখিক ভাবে অভিযোগ পেয়ে ট্যাগ অফিসারকে পাঠানো হয়েছে।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে বিষয়টি বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।