কুড়িগ্রামের সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সোমবার সকালে জানায়,গত ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও বেড়ে ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সে.মি, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ৫১ সে.মি ও ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৮ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। প্লাবিত হচ্ছে নদনদীর অববাহিকার চর ও দ্বীপচরের আরও নতুন নতুন এলাকা। পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার ৯ উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় ২৮৪টি গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
উলিপুর উপজেলার যমুনা সরকারপাড়া গ্রামের মাইদুল ইসলামের কন্যা শিশু মাকসুদা জান্নাত (১১) বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। বানভাসীদের দুর্ভোগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সেই সাথে দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।
তীব্র পানির স্রোতে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট এলাকায় অস্থায়ী বেড়ি বাঁধের ৫০ মিটার ভেঙে গেছে বলে পাউবো জানিয়েছে।অন্যদিকে, সদরের যাত্রাপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে ইতোমধ্যেই পানি উঠেছে। শুলকুর বাজার ব্রিজটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় এখন ওই রাস্তায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দেখা দিয়েছে ১৫টি পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন।সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখন পানির তীব্র স্রোতে মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ পর্যন্ত আমন বীজতলাসহ জেলার ১০ হাজার ৮৩৪ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। এদিকে,রৌমারী ও চররাজিবপুরেও বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
ত্রাণের পর্যাপ্ততার কথা বলা হলেও বন্যার্তদের ভাগ্যে তালিকা করার জটিলতা ও বণ্টনে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে জুটছে না বলে অভিযোগ বানভাসীদের।