২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের জন্ম ইতিহাস ও বর্তমান আওয়ামী লীগ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

সরকারি দলের মামলা,হামলা,পুলিশের লাঠিচার্জ,কাঁদানো গ্যাস,রাবার বুলেট ও পুলিশ প্রশাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করার মধ্য দিয়ে গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের জন্ম।আর সেদিন যেসব দুঃসাহসিক ছাত্রনেতারা সেই দুর্গম গিরিপথ পাড়ি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ছাত্রলীগ,তাঁদেরকে আজ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন গলাচিপার তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।সেসব ছাত্রনেতাদের দুর্বিষহ জীবনযাপন ও অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই শক্তিশালী আওয়ামী লীগ।কিন্তু সদ্য ঘোষিত গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিএনপি,জামাত,শিবির ও রাজাকারদের সন্তান অন্তভুর্ক্ত হওয়ায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।অভিযোগ উঠেছে,দুঃসময়ের ছাত্রনেতাদের পরিবারকে কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি এবং অনেককে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
আরও অভিযোগ উঠেছে দলের সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে।ভাল একটি সংগঠন যুবলীগের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুব মহিলা লীগ নাম মাত্র আছে।স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও কৃষকলীগ মৃত ঘোড়া।দলের চিন্তা শ্রমিকলীগ ও মৎস্যজীবীলীগ নিয়ে,কারণ এ দুটোর মধ্যে রস পাওয়া যায়। এসব নিয়ে একটি লিফলেট সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে ও জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ আওয়ামী লীগের এ কমিটির দায়কার? কার ইশারায় এ কমিটি করা হয়েছে?-এমন প্রশ্ন তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।অনেক খড়,কুটো পুড়িয়ে তৈরি এ সংগঠনে বিএনপি,জামাত,শিবির,রাজাকারদের সন্তান কিংবা আওয়ামী লীগের শিকড় খুঁজে পাওয়া যায়না এমন বিতর্কিত লোকদেরকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার জোর দাবি করেন প্রতিষ্ঠাকালিন অনেক প্রবীণ ছাত্রনেতারা। জানা গেছে,গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের জন্ম ইতিহাস সে এক করুণ ইতিহাস। ১৯৬২ সালে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের মো.ছিদ্দিককে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের যাত্রা শুরু। এ বছরে ৩/৪ মাসের মাথায় পটুয়াখালী জেলা ছাত্রনেতা মরহুম হাবিবুর রহমান ও মরহুম আবদুছ ছালাম গলাচিপায় এসে তাদের নেতৃত্বে পানপট্টি ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি ও মরহুম মু.শাহজাহান মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন।এই ১৯ জনের মধ্যে অনেকের মৌখিক সমর্থন থাকলেও কাজকর্মে পাওয়া যেতনা।এর কারণ ছিলো সরকারের বিরুদ্ধে দল করা যেন নানা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া। তৎকালিন সময়ে গলাচিপা ছাত্র ইউনিয়ন খুব শক্তিশালী ছিল।বিনা কারণে ছাত্রলীগদের নানাভাবে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ ও হয়রানি করত।সংখ্যায় কম বিধায় ছাত্রলীগ কোন প্রতিবাদ করতনা। ছাত্রলীগের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রত্যেকে ৩ জন করে সদস্য সংগ্রহে মাঠে কাজ শুরু করেন।তাঁদের মধ্যে মোফাজ্জেল হোসেন মন্টু,রেজাউল করিম হাওলাদার,মরহুম তালুকদার আ.ছত্তার মল্লিক,মরহুম কালাম মো.ইছা,সরদার জাহাঙ্গীর কবির,মরহুম মোহন মিয়া,মরহুম গিয়াস উদ্দিন এলাহী,মরহুম জাহাঙ্গীর আকন(রাঙ্গাবালী) ও মরহুম মো.কুদ্দুস(ছোটবাইশদিয়া)অন্যতম। এদের দুঃসাহসিক কর্মকান্ড,সীমাহীন ত্যাগ,কঠোর পরিশ্রম,নিরলস ও একাগ্রচিত্তে কাজ করার ফলে ছাত্রলীগ ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে শুরু করে।১৯৬৬ সালে জেলা ছাত্রনেতা আশ্রাব আলী খান ও এম এ রশিদ গলাচিপা এসে সম্মেলন করে মোফাজ্জেল হোসেন মন্টুকে সভাপতি ও রেজাউল করিম হাওলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। এদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সংগঠনের মজবুত ভিত্তি স্থাপনে সক্ষম হয়। ১৯৬৯ সালে গলাচিপা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মরহুম আ.বারেক মিয়া আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন পানপট্টি ইউনিয়নের মু.শাহজাহান মিয়া।১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের শেষ নির্বাচন। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর মনোনিত নৌকা মার্কার প্রার্থীআ.বারেক মিয়া এমপিএ নির্বাচিত হয়ে দক্ষিণ এলাকায় জনপ্রিয় নেতা হিসেবে সুখ্যাতি লাভ করেন।১৯৭৩ সালে আ.বারেক মিয়া পুনরায় গলাচিপা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং রেজাউল করিম হাওলাদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ণতা পায়।পরবর্তীতে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আ.বারেক ঢালী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াকালী-৩
(গলাচিপা-দশমিনা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়ে এ জনপদে নতুন নেতৃত্বে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। এ আসনে তিনি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে কিংবদন্তি নেতা হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে দল তাঁকে বস্ত্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।মূলত সেই সময় থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের এ ভূমি আওয়ামী লীগের উর্বর ভূমিতে রূপান্তরিত হয়ে নৌকার শক্ত ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত হয়। কিম্ত হারানো দিনের কথা ও সদ্য ঘোষিত গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তভুর্ক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠাকালিন ছাত্রনেতা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো.রেজাউল করিম হাওলাদার বলেন,‘১৯৬৬ সালে গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মনোনিত হয়ে নিরলসভাবে কাজ করার মধ্য দিয়ে আমি আওয়ামী লীগে পদার্পন করি।অদ্যবধি দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ১৯৯১ সালের পর থেকে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগে কিছু গণবাহিনীর লোক ঢুকে পড়েছে।আর এ বছর যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তা এ যাবৎ কালের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম কমিটি। কারণ, এখানে রাজাকারের পুত্র,ভাই,আত্মীয়স্বজন,বিএনপিএবং জামাতের লোকজন অন্তভুর্ক্ত হয়েছে’।
গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল কালাম আজাদের কাছে দুঃসময়ের ছাত্রলীগ ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘১৯৬২সালে আমি গলাচিপা থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোনিত হই।অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করে দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ

সর্বশেষ