এম.এ.আর নয়ন, স্টাফ রিপোর্টার:
গুরুতর অসুস্থ রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্ত এবং অসহায় প্রতিবন্ধী শিশুকে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার মানবিক পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। সহযোগিতা পেয়ে অসহায় মানুষগুলো পুলিশ সুপারের দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
এসপি অফিস সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের শিল্পী খাতুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগীর শরীরে রক্ত স্বল্পতা রয়েছে, দ্রুত রক্ত দিতে হবে। এ সময় শিল্পী খাতুন ও তার আত্মীয়-স্বজন অনেক চেষ্টা করেও রক্ত না পাওয়ায় পরবর্তীতে শিল্পী খাতুন তার অসহায়ত্বের কথা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামকে জানান। পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নির্দেশক্রমে রবিবার দুপুরে শিল্পী খাতুনকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেন গোকুলখালী পুলিশ ক্যাম্পের কনস্টেবল ইমরান হোসেন।
রক্ত পেয়ে শিল্পী খাতুন ও তার আত্মীয়-স্বজনেরা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম এবং কনস্টেবল ইমরান হোসেনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে রবিবার (২৯শে নভেম্বর) সকাল ১১টার সময় অসহায় প্রতিবন্ধী শিশু রাফিয়া খাতুন (১২) কে হুইলচেয়ার প্রদান করেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। রবিবার (২৯শে নভেম্বর) সকাল ১১টার সময় প্রতিবন্ধী শিশু রাফিয়া খাতুনকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসলে তাকে হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আঞ্চলিক পত্রিকায় হুইলচেয়ার পাওয়ার আকুতির খবর দেখে একাধিক প্রতিবন্ধীকে হুইলচেয়ার প্রদান করেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। হুইলচেয়ার বিতরণের সেই নিউজ পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। উক্ত ঘটনাগুলো দেখে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলার গোপীনগর গ্রামের আবু মুছার ছেলে সাঈদ হোসেন দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের জন্মগত প্রতিবন্ধী রাফিয়া খাতুনকে একটি হুইলচেয়ার প্রদানের বিষয়ে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় রাফিয়া খাতুনকে একটি হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়। হুইলচেয়ার পেয়ে প্রতিবন্ধী শিশু ও তার মায়ের মুখে অকৃত্রিম হাসি ফুটে ওঠে।
উল্লেখ্য, জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সামাজিক উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজ করে জেলাবাসীর একেবারে অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন। বিপদে পড়ে পুলিশ সুপারের কাছে যেয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছেন এমন লোক চুয়াডাঙ্গা জেলায় খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তিনি ধনী-গরীব সকলের সাথে হাসিমুখে কথা বলেন। বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দরজা সবসময় খোলা। সেইসাথে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে তিনি একটু ও পিছপা হননা।