বরিশাল বাণী: পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় গৌরনদী পৌর সভার তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় দেড় হাজার পরিবারকে পানিবন্ধি হয়ে চরম দূভেৃাগ পোহাতে হচ্ছে। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে পৌর সদরের পৌরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত তিন দিনের টানা বর্ষনে গৌরনদী সভার ৫নং ওয়ার্ডের চরগাধাতলী, ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর বিজয়পুর ও ১নং ওয়ার্ডের সুন্দরী মহল্লার পানি বন্ধিরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিন মহল্লার বাসিন্দারা জানান, ৫নং ওয়ার্ডের প্রায় ৩শ পরিবার, ৬নং ওয়ার্ডের ৫ ও ১নং ওয়ার্ডের ৭শ পরিবার বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পানি বন্দি থাকেন। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এ অবস্থা চললেও প্রতিকারে কোন উদ্যোগ নেই। ৫নং ওয়ার্ডের চরগাধাতলী মহল্লার কয়েকজন নাগরিক বলেন, আমরা বছরে ৫/৬ মাস পানিবন্ধি থাকি। পৌর সদরের প্রান কেন্দ্রে বসবাস করেও জুতা হাতে নিয়ে হাটতে হয়। এই মহল্লার প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দির কারনে সারা বছর চরম দূর্ভোগ পোহাই। মাহবুবা আক্তার(২১) বলেন, পানি বন্দির কারনে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে প্রায় বছর জুড়ে আমাদের গৃহবন্দি থাকতে হয়। গৃহবধূ রুপালী কর্মকর্তার (২৫) বলেন, ঘরের চারিপাশে পানি সব সময় শিশুদের নিয়ে আতংকে থাকতে হয়। তাছাড়া পানির মধ্যে হাটাচলা করে পরিবারের অনেকেই চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। একই অভিযোগ করেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর বিজয়পুর মহল্লার বাসিন্দা মিজানুর রহমান(৪২) ও সবুজ হাওলাদার(৩০)। তারা বলেন, আমাদের মহল্লার আমরা কয়েকশ পরিবার প্রায় বছর জুড়ে পানিবন্ধি থাকি। প্রতিকার চেয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার ধর্না দিলেও কোন প্রতিকার নাই। একইভাবে চরম দূর্ভোগের কথা জানালেন, আব্দুস সালাম(৬০), রাজু তালুকদার (২৮) ও নুর আলম(৪৫)।
সুন্দরদী মহল্লার বাসিন্দারা জানান, সুন্দরী মহল্লায় পয়ঃ নিস্কাশনের কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় বছর জুড়ে জলাবদ্ধতা থাকে। ৪/৫ মাস সার্বক্ষনিক পানিবন্দি থাকতে হয়। পানিবন্ধী সুন্দরী এলাকার শ্যমল দত্ত (৪২), নাসির উদ্দিন(৫১), অর্চনা রানী(২৮)সহ অনেকেই বলেন, আমরা পানি বন্ধী হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছি না। রান্না ঘর চুলা চাটকি পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না বান্না বন্ধ হয়ে যায়। টানা ২/৩ দিন বৃষ্টি হলে আমাদের শুকনা খাবার ক্ষেতে হয়। শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন , আমরা সুন্দরদী মহল্লাার নাগরিকরা পানি বন্ধি হয়ে থাকি। আমাদের দূর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই। পৌর কাউন্সিলরের কাছে অসংখ্যবার ধর্না দিয়েও কোন সুফল পাইনি। পানিবন্দি তিন ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৫ বছর ধরে নির্বাচনের আগে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জলাবদ্ধতা দূরীকরনে কথা দেন কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পরে আর খবর রাখেন না।
টরকী বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলেন, বছরের অর্ধেকেরও বেশী সময় আমাদের পানিবন্ধি থাকতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলে বন্দরের রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। বন্দরের ক্রেতা বিক্রেতাসহ সাধারন মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা জলাবদ্ধতায় পানি বন্দি থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মান ও আশপাশের পুকুর, জলাশয়-ডোবা ভরাটের কারনে জলাবদ্ধাতা তৈরী হয়েছে। নাগরিকদের দূর্ভোগ লাগবে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে।