২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জন্মের পরই দেওয়া হবে এনআইডি

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

অনলাইন ডেস্ক।।
শর্তসাপেক্ষে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইনে জন্মের পরপর জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখন থেকে জন্মের পরপর সবার নিবন্ধন হবে। আর নিবন্ধনের ওই ইউনিক আইডিই হবে জাতীয় পরিচয়পত্র।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনটি (জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন) ২০১০ সালের। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কাছে (এনআইডি কার্যক্রম) আছে। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এটা সরকারের কাছে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাজ ভোটার আইডি নিয়ে শুরু হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে এটা এনআইডি হিসেবে রূপান্তর করা হয়। তখন বেসিক কনসেপ্ট ছিল নির্বাচন সংক্রান্ত।

কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন এনআইডিতে রূপান্তর হলো তখন এটার সঙ্গে অন্যান্য কর্মসূচি যোগ করে দেওয়া হলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে, এটা (এনআইডি) নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকা। কারণ নির্বাচন কমিশন সবক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। সেজন্য এটা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যারা পাসপোর্ট হ্যান্ডেল করে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন আল্টিমেটলি একটা ইউনিক আইডিতে চলে যাচ্ছে। আজকে মন্ত্রিসভা বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে, আমি ওই জাতীয় কমিটির সভাপতি, সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে- জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যে রেজিস্ট্রেশনটা হবে, আল্টিমেটলি আজ থেকে ৫/৬ বছর পর ওই নম্বরটাই সব জায়গায় যাবে। সেজন্য পাসপোর্টের সঙ্গে একটু সিনক্রোনাইজ করে জন্মের সময় নম্বরটা দিয়ে দেওয়া হবে। আমাদের ক্ষেত্রে এটা পারা যাবে না, আমরা তো ইতোমধ্যে জন্মগ্রহণ করেছি। আগামী হয়তো ৩/৪ বছর পর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার (নতুন জন্ম নেয়য়াদের ক্ষেত্রে) ফিঙ্গার প্রিন্ট, চোখের দৃষ্টি, মুখচ্ছবি সবই দিয়ে দেওয়া হবে এবং মডিফিকেশন হবে। আমরা বয়স্ক, আমাদের মডিফিকেশন লাগবে না, একবার দিলেই হবে। এজন্য এটা সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এ আইনটা একটু রিভিউ করা দরকার বলেও মনে করছে মন্ত্রিসভা।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, কারণ আগের আইনে ৩২টি ধারা ছিল, সেটা থেকে কমিয়ে ১৫ করা হয়েছে, অনেকগুলো ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোতে মন্ত্রিসভা সম্মত হয়নি। বলেছে, এটাকে রিভিউ করার জন্য।

এসময় উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৬ বা ৭টি অপরাধের জন্য আলাদা আলাদ দণ্ড ছিল, এ আইনে সবগুলো একসঙ্গে করে সাজা ৭ বছর কারাদণ্ড করা হয়েছে। ছোট অপরাধের জন্য তো ৭ বছরের কারাদণ্ড হবে না। সেজন্য এগুলোকে আলাদা করে রেখে দিতে হবে।

আরও কিছু বিষয় ছিলো। যেমন- অন্যান্য কাজেও এনআইডি ব্যবহার করা যাবে। এ ধারাগুলো নতুন খসড়ায় বাদ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য মন্ত্রিসভা বলেছে, এগুলোকে পর্যালোচনা করে আগের যে ৩২টি ধারা সেই অনুযায়ী করে, যদি দরকার হয় দু-একটি ধারা বাদ বা যোগ করার দরকার হয় সেটা হয়, সেটা ভিন্ন বিষয়। এটা নিয়ে লেজিসলেটিভ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডেকে আমাদের (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ) সঙ্গেও কথা বলে এটাকে যথাসম্ভব ওই ৩২টি ধারার মতো আইন নিয়ে আসবে, বলেন তিনি।

এনআইডি কবে নাগাদ সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আসবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এখন যেভাবে আছে, সেভাবেই চলতে থাকবে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে।

নতুন ব্যবস্থায় কারা ভোটার আইডি পাবে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভোটার আইডি ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের দেওয়া হয়। এখন একটা ডাটাবেজ করে, ইন্টার-অপারেটিভলি (আন্তঃকার্যক্রম), ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে যাবে। তারা (নির্বাচন কমিশন) চাইলে নিতে পারবে, আলাদা ডাটাবেজও করতে পারবে। পাসপোর্ট বা অন্য   যে কোনো কিছু করার জন্য সবার (অন্যান্য সরকারি সংস্থার) ওই ডাটাবেজে ওয়ার্কিং এন্ট্রি থাকবে।

জন্ম নিবন্ধনও ব্যবস্থাও কী সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে চলে যাবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, সবাই মিলে আলোচনা করে একটা সিস্টেম ডেভেলপ করতে বলা হয়েছে। জন্মের সময় যে রেজিস্ট্রেশন হবে, সেই নম্বরটা যাতে সব জায়গায় থাকে। আইন ও বিধি হলে এ বিষয়গুলো পরিস্কার হবে। আপাতত যেভাবে আছে সেভাবে চলবে। কিন্তু নিজেরা বসে ইন্টার-অপারেটিবিলি থাকে, ডুপ্লিকেশন না হয়, কেউ যাতে বাদ না পড়ে- সেটা দেখে কাজ করতে বলা হয়েছে।

এনআইডি কারা পাবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এনআইডি হয়ে যাবে। এই আইনটা হওয়ার পর। আইনটা হতে কতদিন লাগবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে হয় আর এক মাস লাগবে এটা মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আসতে।

আগামী নির্বাচনের আগে আইনটি চূড়ান্ত হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করবে।

সর্বশেষ