২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আগৈলঝাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নির্মিত ঘর তদন্তে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
মুজিব বর্ষে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দুই দফায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৫১টি ঘর পরিদর্শণে পৃথক তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘর পরিদর্শন করেছেন। বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার এর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস এবং টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরাও বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মাণ করা ঘর পরিদর্শণ করেন। এসময় পর্যবেক্ষণ কমিটির কর্মকর্তারা ঘর নির্মানের কারিগড়ি দিক, নির্মাণ শৈলী, অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কালন ব্যয় অনুযায়ী ব্যয় হয়েছে কি না তা যাচাই ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সুফল ভোগীদের সাথেও কথা বলেছেন।
জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস এবং অপর টেকনিক্যাল টিমের সদস্য এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার এবং পিডব্লিউডি’র সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার প্রকল্পর আওতায় নির্মিত বাড়ি পরিদর্শণ করেন।
এসময় আগৈলঝাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আবুল হাশেম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মোশারফ হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও উপজেলা প্রকৌশলী রাজ কুমার গাইন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগন তদন্ত কমিটির সাথে থেকে তাদের তদন্ত কাজে সহায়তা করেন।
“আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’’ এই শ্লোগানে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীতে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথমধাপে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩৬টি পরিবার পাকা বাড়ি উপহার পেয়েছে। প্রকল্পের আওতায় রাজিহার ইউনিয়নে ৫টি, বাকাল ইউনিয়নে ৭টি, গৈলা ইউনিয়নে ১৯টি ও রতœপুর ইউনিয়নে ৫টি ঘর নির্মান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২এর আওতায় আগৈলঝাড়া উপজেলায় ‘ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য “ক” তফসীলভুক্ত ২শতক জমি বন্দোবস্ত ও দলিল প্রদান পূর্বক ৩৬টি পরিবারকে ওই জায়গার উপর ১লাখ ৭১হাজার টাকা ব্যয়ে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দে উপজেলায় ১৫টি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে রতœপুর ইউনিয়নে ১২টি, গৈলা ইউনিয়নে ১টি বাড়ির নির্মান কাজ শেষের পথে থাকলেও ২টি বাড়ির জায়গা নির্ধারন না হওয়ায় এখনও নির্মান কাজ শুরু করা যায়নি।
বিভিন্নস্থানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের পরেই ধ্বসে পরাসহ বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট সরকার। এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা হবার পরে ত্রুটিপূর্ণ ঘর মেরামত করাসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানানো হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ৮জুলাই প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় নির্মিত ও নির্মাণাধীন ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করতে পাঁচটি কমিটি গঠন করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার।
তদন্ত কমিটির সদস্যদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের নির্মাণ শৈলী, গুণগত মান, অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কালন ব্যয় অনুযায়ী হয়েছে কি না তা যাচাই ও পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রকল্প পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছেন দুই কমিটির লোকজন একত্রে পরিদর্শন করলেও জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদন এবং টেকনিক্যাল কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পৃথকভাবে জমা দেয়া হবে। প্রতিবেদন জমা দেবার আগে তিনি কোন মন্তব্য করবেন না বলেও জানান।

সর্বশেষ