১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ঝালকাঠিতে আম্পানে প্রভাবে উত্তাল ঝড়-বৃষ্টি, আতঙ্কে নদী তীরের মানুষ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:: দখিন জনপদের জেলা ঝালকাঠিতে আম্পানের প্রভাবে ঝড় ও গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।গত রাত ১০টা থেকে শুরু হয়ে তা অব্যহত আছে। জেলার নদীগুলো ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে।বুধবার ভোর থেকে জেলা জুড়ে ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।অব্যহত রয়েছে প্রচন্ড গতিবেগ বাতাস। সেই সাথে আকাশ অন্ধকার। জেলা শহরের সুগন্ধা চর এবং জেলার রাজাপুর ও নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা-বিশখালি এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার বিশখালি ও হলতা নদী পাড়ের অসংখ্য পরিবার এখন আশয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।

জেলা দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আশ্রাফুল হক জানিয়েছেন, জেলায় মোট ২৭৪টি আশ্রয় কেন্দ্র নদী পাড়ের ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় ৫টি কন্ট্রোল রুম থেকে তদারকি করা করছে জেলা প্রশাসন। জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো: রিয়াদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই আবারও মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আসার জন্য বলা হচ্ছে।

জেলার সুগন্ধা, বিষখালী ও গাবখান নদীর মোহনা (গাবখান ব্রিজ সংলগ্ন) থেকে দক্ষিণে বয়ে গেছে বিষখালী নদী। আম্ফানের আতঙ্কে ঝালকাঠি সদর ও কাঁঠালিয়া এলাকার ২৯ কিলোমিটার বিষখালী নদী তীরবর্তী মানুষ এখন চরম আতঙ্কে। এ দুই উপজেলায় নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে ২ লক্ষাধিক মানূষ।

ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও বুলবুলে জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলা কাঁঠালিয়া। বেড়িবাঁধ না থাকায় চার ইউনিয়নের জনগণের দুর্ভোগের শেষ নেই। বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ক্ষোভেরও অন্ত নেই। বাঁধের অভাবে প্রতিবছরই জলোচ্ছ্বাসে ফসল ও মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

নদী তীরবর্তী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় সিডরে কাঠালিয়া উপজেলায় ২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঘূর্ণিঝড় আইলা ও বুলবুল আঘাত হানে কাঁঠালিয়ায়। কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বিষখালী নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেসে গেছে জেলেদের জাল ও নৌকা। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও ছোট-বড় পুকুর। নষ্ট হয়ে গেছে কাঁচা আধা কাঁচা ঘর-বাড়ি ও ফসলের ক্ষেত। এছাড়াও স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আমুয়া, হেতালবুনিয়া, মশাবুনিয়া, চিংড়াখালী, জয়খালী, কাঁঠালিয়া সদরসহ প্রায় ২০টি গ্রামের ফসলি মাঠ প্লাবিত হচ্ছে।

অপরদিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন, রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নও বিষখালী নদীর তীরে। এসব এলাকায় কিছু অংশে বেড়িবাঁধ থাকলেও তা সংস্কারের অভাবে ধসে পড়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের পানিও ফসলি জমিতে প্রবেশ করে। এছাড়া বেশিরভাগ অংশেই বেড়িবাঁধ না থাকায় লোকজন চরম আতঙ্কে রয়েছেন।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানান, ঝালকাঠির বিষখালী নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই। সরেজমিনে পরিদর্শন করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বেড়িবাঁধ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ এলেই বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে। তবে বর্তমানে নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ