ঝালকাঠি প্রতিনিধি ::: ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় মেহেদী হাসান (৮) নামে এক শিশুকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলায় এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায় আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মাসুদুর রহমান এ রায় প্রদান করেন।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি হলেন- কাঁঠালিয়া উপজেলার জোড়াখালি এলাকার মো. কবির জমাদ্দারের ছেলে মো. ইয়াসিন (২৮)।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন- একই গ্রামের বাবুল জমাদ্দারের স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪৫)।
রায় ঘোষণার সময় উভয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রেহেনা বেগম নিহত শিশু মেহেদী হাসানের সম্পর্কে আপন চাচি। এ মামলায় মো. শাহাদাৎ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে খালাস দেওয়া হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালিয়া উপজেলার জোড়াখালি এলাকার মো. শাহিন জমাদ্দারের মাদরাসা পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত ভাইয়ের ছেলে শাওন। এ ঘটনায় শাওনকে শাসন করেন মো. শাহিন জমাদ্দার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাওনের বন্ধু আসামি ইয়াসিন ও মা রেহেনা বেগম শাহিন জমাদ্দারের শিশু পুত্র মেহেদী হাসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তারা ২০১৫ সালের ২৮ আগস্ট বিকেলে শিশু মেহেদী হাসানকে বাড়ির পাশ থেকে অপহরণ করে। পরে ২৮ থেকে ৩০ আগস্ট এর মধ্যে যেকোনো একদিন মেহেদীকে কুপিয়ে হত্যা করে জোড়খালী খালে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা শাহিন জমাদ্দার ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট কাঁঠালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাঁঠালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুস সালাম ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। এ মামলায় শিশু আদালতে আসামি শাওন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়া সত্ত্বেও খালাস পায়।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর কাঁঠালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিদ্দিকুর রহমান পুনরায় তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু বলেন, ‘১৪ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত আসামিদের এই দণ্ড প্রদান করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী মল্লিক মু. নাসির উদ্দীন কবির বলেন, ‘ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি মো. ইয়াসিন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফেঁসে গেছেন। এ ঘটনার আসল আসামি মো. ইয়াসিন হচ্ছে আসামি রেহেনা বেগমের অন্য এক ছেলে। নামের মিল থাকায় নির্দোষ ইয়াসিন ফাঁসির দণ্ড হয়েছে। আসামি ইয়াসিন উচ্চ আদালতে আপিল করবে।’