ঝালকাঠি প্রতিনিধি ::: ঝালকাঠিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে নানা ভাবে চলছে সুদের অবৈধ কারবার। সুদের দুষ্টচক্রে নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। বিশেষ করে জেলা শহরের চরাঞ্চলে অসংখ্য পরিবার এখন দিশেহারা।
ঝালকাঠি পৌর শহরের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় প্রতি ঘরেই আছে স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থা থেকে নেয়া কিস্তি ঋণের বোঝা। ব্যক্তি পর্যায়ের সুদি কারবারিদের কাছে থেকেও দিন কিংবা মাসিক হারে চড়া সুদের ঋণ নিয়ে দিশেহারা এসব শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষ।
জানা গেছে, শহরের বাঁশপট্টি, কাঠপট্টি, কলাবাগান, নতুনচর এলাকায় আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে দুষ্ট চক্রের এই ঋণের জাল। নানাভাবে অভাবে পড়ে বেড়িয়ে আসতে পারছে না অসহায় মানুষগুলো। আর এই সুযোগেই ব্যক্তি পর্যায়ের সুদি কারবারির পাশাপাশি স্থানীয় সমবায় সমিতি থেকে নিবন্ধন নিয়ে নিয়মনীতি ছাড়াই কিস্তি ঋণের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণগ্রস্ত অসহায়দের ওপর নেমে আসে সুদি কারবারিদের অমানবিক নির্যাতন। অনেককে ঘরে তালা মেরে পালিয়ে বেড়াতেও হয়। সম্প্রতি শহরের কাঠপট্টি এলাকায় ঋণের চক্রে পড়ে দুই যুবকের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে।
পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির সাগর বলেন, ‘এখনই সুদিচক্রকে থামাতে না পারলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এরইমধ্যে চড়া সুদ পরিশোধ না করতে পেরে দু’জনের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে।’
সাংস্কৃতিক সংগঠক বাউল শুভ বলেন, ‘এই দুই ওয়ার্ডের মানুষ শ্রমজীবী এবং গরীব। তাই প্রভাবশালীরা এদেরই টার্গেট করে চড়া সুদে ঋণ দেয়। এসব অসহায় মানুষের কাছ থেকে খুব সহজেই ঋণ আদায় করা যায় বলেই এখানে সুদের ব্যবসা এখন ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।’
তবে অবৈধ সুদি কারবারিদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স জানিয়ে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘সুদি কারবারিদের একটি তালিকা তৈরি করে খুব শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।’
ঝালকাঠি পৌর এলাকার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় তিন হাজার পরিবারের বসবাস। যাদের বেশির ভাগই শ্রমজীবী।