২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও গভর্নর নিহ*ত নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা লন্ডনে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ: ফিলি*স্তিনে গ*ণহ*ত্যা বন্ধের দাবী দেশের বীমা খাতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৯ মে সারাদিন লালমোহন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কাপ পিরিচ মার্কায় ভোট দিন আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম সৌদিতে ২৮৭৬০ বাংলাদেশি হজযাত্রী পৌঁছেছেন, দুইজনের মৃত্যু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন : দ্বিতীয় ধাপে ৪৫৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন সোমবার থেকে ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও বহাল তবিয়তে আমতলীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

হারুন অর রশীদ,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ বরগুনার আমতলী উপজেলার হরিমৃতঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চলতি দায়িত্ব) আমতলী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফেরদৌসি বেগম ছেলের স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও বহাল তবিয়তে চাকুরিতে রয়েছেন। মামলার বাদী আদালতের রায়সহ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করছেন উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে।

ভুক্তভোগী নাজমুন নাহার এবং মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার উত্তর টেপুরা গ্রামের মো. আবুল হেসেনের মেয়ে মোসা. নাজমুন নাহারের সাথে আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ আফাজ উদ্দিন চুন্নু মিরা এবং হরিমৃতুঞ্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চলতি দায়িত্ব) ফেরদৌসি বেগমের ছেলে সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন হাদি সজিবের সাথে ২০০৯ সালের ১৭ নভেম্বর বিয়ে হয়।

বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ছেলেকে নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ সংসারের যাবতীয় মালামাল দিয়ে দেয়। বিয়ের পর প্রায়ই যৌতুক লোভী ইজাজ মা ভাইয়ের প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক এবং একটি মোটর সাইকেল দাবি করেন। নাজমুন নাহার যৌতুকের ওই টাকা এবং মোটর সাইকেল দিতে অস্বীকার করলে স্বামী ইজাজ, শাশুড়ি ফেরদৌসি এবং দেবর শাহরিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে ব্যাপক মারধর করে।

এক পর্যায়ে স্বামী ইজাজ জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে নাজমুন নাহারের সারা শরীর ঝলসে দেয় এবং গাছের লাঠি (ডাল) দিয়ে আঘাত করে মেরুদণ্ড জখম করে। খবর পেয়ে নাজমুন নাহারের বাবা মা তাকে বাড়ি নিয়ে যান।

ওই ঘটনায় নাজমুন নাহার বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নারী শিশু নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার রায় প্রদান করেন আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আরিফুর রহমান।

রায়ে স্বামী সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন সজিবকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার মা প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমকে আট হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম আদালতের ওই আদেশ মেনে জরিমানার টাকাও পরিশোধ করেন।

আদালতের ওই আদেশের পর বাদী নাজমুন নাহার তার শাশুড়ি ফেরদৌসি বেগম সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগম বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করবো।

নাজমুন নাহার বলেন, আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমার শাশুড়ি সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি। আশাকরি আমি সেখানেও ন্যায় বিচার পাবো।

সদ্য বদলী হওয়া আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, যৌতুক মামলায় আদালতের রায়ে ফেরদৌসি নামে এক শিক্ষকের আর্থিক দণ্ড হয়েছে। রায়ের কপিসহ বাদীর একটি আবেদন পেয়েছি। আমার মতামতসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনটি জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালতে একজন শিক্ষকের যৌতুক মামলায় আর্থিক দণ্ড হয়েছে এ বিষয়ের সকল কাগজপত্র পাওয়া গেছে। সরকারি চাকুরি বিধির নিয়ম অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ