অনলাইন ডেস্ক :: চলমান করোনা (Corona) মহামারিতে ঈদুল আজহা সামনে রেখে বাড়ি ফিরছে অসংখ্য মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ লঞ্চযোগে সদরঘাট নদীবন্দর দিয়ে বাড়ি যায়। প্রতিদিন বিআইডব্লিউটিএ ও মোবাইল কোর্টের জরিমানার পরও কেউ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অর্ধেক যাত্রীর পরিবর্তে দ্বিগুণ যাত্রী তুলছে। গত রমজানের ঈদ সময়ে কঠোর লকডাউন থাকায় বাড়ি ফিরতে পারেনি অসংখ্য মানুষ। এবারও ঈদুল আজহা সামনে রেখে ২ সপ্তাহ কঠোর লকডাউনে বন্ধ ছিল গণপরিবহন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাত দিনের (১৫ থেকে ২২ জুলাই) জন্য লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। তবে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব গণপরিবহনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে যাত্রীবাহী লঞ্চে মোটরসাইকেল বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সদরঘাটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ১০০ জন, নৌপুলিশ ৭০ জন, র্যাপিড অ্যাকশন বাটালিয়ন (র্যাব), ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডের সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএ’র বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মানতে তদারকি করছেন।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও অতিরিক্ত যাত্রী না নিতে আমরা নিয়মিত মাইকিং, মহড়া ও পোস্টারিং করে সবাইকে সচেতন করছি। না মানলে জরিমানা করছি। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১৫ জুলাই গ্রীনলাইন ওয়াটার ওয়েজ লঞ্চকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা, সঙ্গে ৫ জন যাত্রীকে জরিমানা; ১৬ জুন এমভি মানামী লঞ্চকে ৪ হাজার টাকা ও ১২ যাত্রীর জরিমানা; ১৭ জুলাই মিতালী-৪ লঞ্চকে ৩ হাজার ও ১৪ যাত্রীকে জরিমানা করে বিআইডব্লিউটিএ ম্যাজিস্ট্রেট।’
নিয়মিত জরিমানা গুনেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন যাত্রীরা। মিতালী, রফরফ, ইমাম হাসান, ফারহান, কর্ণফুলী, তাসরিফ, মানামী, সুন্দরবন, পারাবাত, সুরভীসহ অসংখ্য লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে।
ফেরারি শিপিং জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা লঞ্চে স্যানিটাইজার, মাস্ক, তাপমাত্রা নির্ণায়ক মেশিন ও আইসোলেশন রুম রেখেছি। সামাজিক দূরত্বের দাগ দিয়ে রেখেছি, কিন্তু মানুষ তা মানছে না। আমরা ভাড়া বাড়াইনি, মনপুরা-হাতিয়া রুটে সরকার ঘোষিত ৬০ পার্সেন্ট ভাড়া বাড়ালে হয় ৫৯০ টাকা, আমরা নিচ্ছি ৪০০ টাকা।
লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি ও পারাবাত কোম্পানির মালিক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘রোজার ঈদেই লঞ্চ ব্যবসা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন লঞ্চে কয়েকজন স্বাস্থ্যবিধি মানবে, ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই লাখ লাখ যাত্রী পার হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে আমার ১০ কোটি টাকা লোকসান।’
ঢাকা নদীবন্দর নৌ চলাচল ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মামুন অর রশিদ বলেন, লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষমতা কম, পাবলিক নিজেরা সচেতন না হলে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব নয়। লঞ্চ গন্তব্যে আসলে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধোয়ার নির্দেশ দিয়েছি। কেবিনের বিছানার চাদর ৩ সেট অতিরিক্ত রাখতে বলেছি, যেন একজনের ব্যবহার করা চাদর অন্যজন ব্যবহার করা না লাগে। ফারহান লঞ্চের এক যাত্রী বলেন, এত যাত্রী। আমরা দূরত্ব মেন্টেইন করব কীভাবে।