ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে অবৈধ জাল অপসারণের কয়েক মাসের মধ্যেই আকাল কাটিয়ে ব্যাপক মাছ ধরা পড়ছে। হাটবাজার নদীর মাছে ভরপুর। ইলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়ায় খুশি জেলেরা।
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর প্রবেশপথগুলোতে অবৈধ ছোট ফাঁসের বেহুন্দি, চরঘেরা, পাইজাল, বেরজাল, খুঁটিজাল দিয়ে মাছের চলাচল বন্ধ করে রেখেছিল প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নদীতে ১০৯টি ডুবোচরে নিষিদ্ধ মশারি ও চরঘেরা জাল দিয়ে জবরদখল করেছিল প্রভাবশালী কিছু মানুষ। এতে হাতেগোনা কিছু মানুষ লাভবান হলেও বছরের পর বছর মাছের সংকটে ভুগছিলেন দরিদ্র জেলেরা।
সম্প্রতি মৎস্য বিভাগ এসব অবৈধ জাল অপসারণ করে প্রকৃত জেলেদের জন্য নদী উন্মুক্ত করে দেয়। এর সুফল পেতে শুরু করেছেন মৎস্যজীবীরা। তারা জানান, নদীতে সবধরনের অবৈধ জাল নিষিদ্ধ করে দেয়ায় এখন মাছ বেশি ধরা পড়ছে। এখন আর জেলেরা ছোট মাছ ধরতে পারছেন না, তাই মাছের উৎপাদন বেড়েছে।
নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে মৎস্য বিভাগের এমন অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে এ ধারা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন ভোলা সদর উপজেলার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতি সভাপতি মো. এরশাদ ফরাজি।
তিনি বলেন, মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী যেভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে, ঠিক তেমনভাবে যদি পার্শ্ববর্তী জেলাও আমাদের মেঘনা নদীকে পরিষ্কার রাখে, সেদিকে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
সম্প্রতি জেলা মৎস্য বিভাগ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জাল ও আড়াই কোটি মিটার কারেন্ট জাল অপসারণ করেছে উল্লেখ করে ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদ্যুল্যাহ বলেন, আগে অবৈধ জাল দিয়ে ছোট মাছ ধরা ও ডিম ধরা হতো, এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। এতে ইলিশ ও পোয়াসহ মাছের উৎপাদন বেড়েছে।
নদীতে অবৈধ দখলমুক্ত করে মাছের আবাসস্থল, প্রজনন ও খাবার নিশ্চিত করায় উৎপাদন বাড়ছে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৭ মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইলিশ পাওয়া গেছে।