৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

নারী কেলেঙ্কারীঃ এসআই বাশারের পর এবার এসআই মেহেদি গ্রেফতার

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়া ১৫ বছরের এক কিশোরীর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে কু-প্রস্তাব, রুমডেট করার জন্য চাপ দেয়া এবং অর্থদাবী ও অর্থ আদায়ের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  গ্রেফতার মেহেদী হাসানকে বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে আদালতের নিকট সোপর্দ করা হয়।
এ নিয়ে পৃথক অপরাধে
এক মাসের মধ্যে নিজ থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলো পুলিশের দুইজন এসআই।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে একটি অভিযোগ আসে, যেখানে অভিভাবকরা দাবী করেন- তাদের মেয়ের মোবাইলে কেউ একজন অশ্লীল মেসেজ পাঠায় এবং টাকা দাবী করে। এ ঘটনায় আমরা তদন্তে নামি। একপর্যায়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিটি যখন বিকাশ নাম্বারে টাকা চায়, তখন সেই নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে আমরা অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারে অভিযান চালাই। অভিযানে গিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ধরার পর দেখা যায়, তিনি কয়েকদিন আগে অপর একটি অপরাধে সাসপেন্ড হওয়া পুলশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
এরপর অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তর মোবাইল ফোন যাচাই করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃতর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে নিয়মানুযায়ী বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে বরিশাল নগরের বাসিন্দা ওই কিশোরীর মায়ের দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে ভিকটিম কিশোরীর নাম্বারে কল করেন এসআই মেহেদী হাসান। তিনি তার পরিচয় গোপন রেখে কিশোরীকে জানান, কিশোরীর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও তার কাছে রয়েছে। এরপর তিনি কিশোরীর হোয়াটসঅ্যাপে সেই ছবি ও ভিডিও পাঠান।
পরবর্তীতে ওই কিশোরীকে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে ফোন করে ও মেসেজ দিয়ে আরও কিছু একান্ত ব্যক্তিগত ভিডিও ধারণ করে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলেন ওই এসআই এবং কিশোরীকে নানাভাবে ব্লাকমেইল করা শুরু করেন।
এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি ওই কিশোরীর হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে একইরকম ছবি ও ভিডিও ধারণ করে পাঠাতে বলে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু কিশোরী তাতে রাজি না হলে তার বন্ধু-বান্ধব ও নিকট আত্মীয়-স্বজনদের কাছে সেগুলো পাঠাবেন বলে ভয়ভীতি দেখান। পাশাপাশি কু-প্রস্তাব ও রুমডেট করার জন্য কিশোরীকে চাপ দিতে থাকেন।
এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরীর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচার ও প্রকাশ করে তার মানহানি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে গত ১৫ নভেম্বর ১ হাজার টাকাও নিয়ে নেন গ্রেফতার হওয়া এসআই। কিন্তু এরপর কিশোরীর কাছে আরও টাকা দাবী করলে সে বিষয়টি অভিভাবকদের জানায় এবং তারা বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ফাঁদ পেতে অভিযান চালিয়ে নগরের বাকলার মোড় এলাকা থেকে এসআই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আরাফাত হাসান সাংবাদিকদের জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি হিসেবে এসআই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয় এবং বুধবার দুপুরে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এর আগে পর্যটকদের আটকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এসআই মেহেদী হাসান ও থানার অপর এসআই ইব্রাহিম খলিলকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকা এসআই মেহেদী হাসান বরিশাল নগরের স্ব-রোড বাকলার মোড় সংলগ্ন একটি বহুতল ভবনের তিন তলায় ভাড়া থাকতেন।
এদিকে, গত ১৫ অক্টোবর মামলার অভিযোগ নিয়ে থানায় আসা এক বিধবা নারীকে ধর্ষণের মামলায় কোতয়ালী মডেল থানার আরেক এসআই আবুল বাশারকেও গ্রেফতার করা হয়।

সর্বশেষ