১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
এবার দশমিনায় নির্বাচন বর্জনের ডাক দিল বিএনপি ঝালকাঠিতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত-১৫ দুমকিতে কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত গারুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেন সাখাওয়াত হোসেন খান পলাশ নলছিটিতে ইটভাটাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা বাকেরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে পোস্ট, গ্রেপ্তার ১ উপজেলা ভোটে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এমপি পঙ্কজের বিরুদ্ধে উজিরপুরের আলোচিত শিশু তামান্না ধর্ষন ও হত্যা মামলার ২ আসামি গ্রেফতার। আমতলীতে হেরোইন সহ নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার বরিশালে ধর্ষণের পর শিশু হত্যা, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার বাবা-ছেলে

পটুয়াখালীতে চাঁদা না দেওয়ায় গাড়ির চাকা খুলে নিল আ.লীগ নেতা!

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পটুয়াখালী প্রতিনিধি ::: পটুয়াখালীর দুমকিতে অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মনিরুজ্জামান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এমনকি চাঁদা না দেওয়ায় গাড়ির চাকা খুলে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের বড় নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করে তিনি নিজেকে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাবান নেতা হিসেবে জাহির করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নে তার জন্মস্থান হলেও তিনি দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের শাহজাহান ইসলামের মেয়েকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই স্থায়ী হয়ে গেছেন। অটো শ্রমিক থেকে বাগিয়ে নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ। দলীয় পদের দাপটে দুমকি উপজেলার অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলেন। এতে অটোচালকদের কাছে একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছেন মনিরুজ্জামান মনির। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মনিরুজ্জামান মনির।

কয়েকজন অটোরিকশাচালক অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন জায়গায় তাদের থামিয়ে রাতে থানার পেট্রল ডিউটি করার জন্য বাধ্য করেন তিনি। কেউ অপারগতা প্রকাশ করলেই তার কাছে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে জোর করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে অটোরিকশা আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের ইদ্রিস খানের ছেলে মিন্টু খান জানান, দুমকি থানা ব্রিজ এলাকায় আসলে মনির ভাই আমাদের গাড়ি থামিয়ে থানার ডিউটির কথা বলেন। ডিউটি করতে না চাইলে টাকা দিতে হয় তাকে।

তিনি আরও জানান, গরিব মানুষ কষ্ট করে টাকা কামাই করেন। এভাবে হয়রানি বন্ধের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। অটোচালক মো. ইলিয়াস জানান, প্রতিদিনের মতো থানা ব্রিজ এলাকায় আসলে মনিরুজ্জামান তার অটোগাড়ি হাতের ইশারায় গতিরোধ করেন এবং থানায় ডিউটির কথা বলেন।

গাড়ির যান্ত্রিক সমস্যার কথা বললে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার গাড়ির চাকা খুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি এরকম হয়রানির জন্য বিচার দাবি করেন।

সৈয়দ রাব্বি নামের একজন জানান, মনির ভাই আমাকে থানার ডিউটির কথা বলেন। আমি প্রথমে রাজি না হওয়ায় আমার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। আমি সাতশ টাকা দিলে তিনি নিতে অস্বীকার করেন। সারাদিন বসিয়ে রেখে শেষপর্যন্ত আমাকে ডিউটি করতে হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অটোচালক জানান, বছরে তিন-চারবার রোটেশনে থানার ডিউটি করতে হয়। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সকাল ৬টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। আমাদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। মাঝে-মধ্যে চা নাস্তা খাওয়ান। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।

এ ব্যাপারে একজন ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপজেলায় চলাচলকারী প্রায় ৯০০ খেটেখাওয়া গরিব অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত বিভিন্ন অংকের চাঁদা তোলেন মনির।

প্রতিদিন গড়ে যদি অন্তত ১০টি অটোরিকশা থেকে ন্যূনতম দুইশ করে চাঁদা তোলেন তাতেও দৈনিক ২০০০ টাকা আয় রয়েছে তার। তিনি নিজেকে এমনভাবে জাহির করেছেন কেউ তার ব্যাপারে মুখ খুলতেও রাজি নন।

অভিযোগের বিষয়ে মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করতেই কোনো কুচক্রী মহল আমার পিছে লেগে থাকতে পারে। তবে ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কয়েকজন- এমন কথা বললে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। চাকা খুলে রাখার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে তদন্তের মাধ্যমে যদি এর সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুমকি থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

সর্বশেষ