পটুয়াখালী প্রতিনিধি ::: বার্ষিক আয় ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৫ টাকা হলেও পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ব্যাংকেই আছে ১২১ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ৩৬১ টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদেও সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। আবুল কালাম আজাদের পাহাড় পরিমাণ টাকার হিসাব প্রকাশ্যে আসায় সবার চোখ চড়কগাছ। বিস্মিত গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও।
পটুয়াখালী শহরের মুসলিমপাড়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাফিয়া বেগম দম্পতির ৯ সন্তানের মধ্যে সবার বড় আবুল কালাম আজাদ। লেখাপড়া করেছেন বিএ পর্যন্ত। আঁকাবাঁকা পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে হয়েছেন টাকার কুমির।
হলফনামার হিসাবমতে, বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদের আপন বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের ব্যাংকে থাকা টাকার হিসাব দেখে বিস্মিত হয়েছেন অনেকে। এত টাকা কোথা থেকে মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের অ্যাকাউন্টে এসেছে তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তদন্ত শাখা। অবাক হয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও।
মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের হলফনামার স্বীকারোক্তি মতে, অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ১২১ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ৩৬১ টাকা। তার কাছে নগদ টাকা আছে ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৭ টাকা। ২টি মোটরগাড়ি ও ২টি কারগো রয়েছে। ১৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে তার নিজের।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ ২২.২৮০২ একর এবং অকৃষি রয়েছে ৯৫.৪৭ শতাংশ। কী ধরনের দালান উল্লেখ না করলেও ৪টি দালান ও ১টি ফ্ল্যাট বাড়ি আছে।
আবুল কালাম আজাদের দায়দেনা রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পটুয়াখালী শাখা ১০৫,৩৯,২০,০০০ টাকা, যমুনা ব্যাংক ঢাকার ধানমণ্ডি শাখায় ৩,১৭,৭৩,৮২৫ টাকা আর পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড পটুয়াখালী শাখায় ৯,৫০,০০০০০ টাকা।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবুল কালাম আজাদের নামে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ দাবি করে চিঠি দিয়েছে। আবুল কালাম আজাদকে ঋণখেলাপি দাবি করে তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণার দাবি করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডা. শফিকুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক অবশ্য এ আপিল শুনানি শেষে আবুল কালাম আজাদ ও জামিনদার মহিউদ্দিন আহম্মেদের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া হলফনামায় আবুল কালাম আজাদ ঠিকাদারি, শিপিং ও রড সিমেন্টের ব্যবসা এবং ওষুধ কোম্পানির কথা উল্লেখ করলেও এসব খাতে কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন তার কোনো উল্লেখ নেই। মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের স্ত্রীর অস্থাবর-স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৫ লাখ টাকা, ২৫ ভরি স্বর্ণ, ৬ শতাংশ অকৃষি জমি ও ১টি দালান।