২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

পিরোজপুরে সাকিল হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় শাকিল সিকদার (২০) হত্যা মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন ও দুজনকে পাঁচ বছরের করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মুহা. মুহিদুজ্জামান আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার হোগলপাতি গ্রামের সোহেল রানা (২৬), বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ঘুটাবাছা গ্রামের মাসুম বিল্লাহ (৩৮), একই গ্রামের আল–আমিন (২৮) ও পাথরঘাটা উপজেলার পূর্ব হাতেমপুর গ্রামের মিলন ঘরামী (২৬)। পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ ঘুটাবাছা গ্রামের হিরু হাওলাদার (৩৯) ও একই উপজেলার ছোট পাথরঘাটা গ্রামের লিটন চৌকিদার (৩০)।

রায় ঘোষণার সময় আসামি সোহেল রানা, হিরু হাওলাদার ও লিটন চৌকিদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য তিন আসামি মাসুম বিল্লাহ, আল আমিন ও মিলন ঘরামী ঘটনার পর থেকে পলাতক।

নিহত শাকিল সিকদার ভান্ডারিয় উপজেলার নিজ ভান্ডারিয়া গ্রামের মৃত নূরুল ইসলাম সিকদারের ছেলে। তাঁকে হত্যার ঘটনাটি প্রায় ছয় বছর সাত মাস আগের।
বিজ্ঞাপন

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আসামি সোহেল রানা শাকিল সিকদারের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে তাঁকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর আসামি সোহেল রানা, মাসুম বিল্লাহ, আল আমিন ও মিলন ঘরামী শাকিলকে ইয়াবা সেবন করানোর কথা বলে ভান্ডারিয়া উপজেলার সিংহখালী গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর সোহেল রানা মাসুম বিল্লাহকে ইয়াবা কিনে আনার জন্য ২০০ টাকা দেন। মাসুম বিল্লাহ ইয়াবা না কিনে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ও কোমল পানীয় নিয়ে যান। শাকিল সিকদার কোমল পানীয় পান করার সময় আসামিরা চারজন মিলে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর আসামিরা শাকিল সিকদারের লাশ ধানখেতের মধ্যে ফেলে রেখে শাকিলের মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যান। মাসুম বিল্লাহ মোটরসাইকেলটি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার লিটন চৌকিদারের কাছে নিয়ে যান। লিটন চৌকিদার তাঁর মামা হিরু হাওলাদারের কাছে মোটরসাইকেলটি রেখে আসেন।

মামলার ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আজ তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। বাকি তিন আসামি মাসুম বিল্লাহ, আল আমিন ও মিলন ঘরামী ঘটনার পর থেকে পলাতক।

ঘটনার পরদিন সকালে সিংহখালী গ্রামের ধানখেত থেকে শাকিল সিকদারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই শাকিল সিকদারের মা আলো রানী বাদী হয়ে গৌতম কুমার দাস ও জকি খান নামের দুই ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্তকালে এ ঘটনায় সোহেল রানার সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সোহেল রানার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরে গ্রেপ্তার করা হয় হিরু হাওলাদারকে। হিরুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহতের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন

এরপর পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবিবের কাছে সোহেল রানা ও হিরু হাওলাদার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৪ সালের ২২ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভান্ডারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস হোসেন তদন্ত শেষে সোহেল রানা, মাসুম বিল্লাহ, আল আমিন ও মিলন ঘরামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তদন্তে কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে গৌতম কুমার দাস ও জকি খানের নাম বাদ দেয় পুলিশ। পরে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির (পিপি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হিরু হাওলাদার ও লিটন চৌকিদারকে মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন আদালত। মামলার ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আজ তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) ছিলেন খান মো. আলাউদ্দিন ও আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আহসানুল কবির ও ফজলুল হক হাওলাদার। রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক হাওলাদার বলেন, ‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

সর্বশেষ