১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফের বিতর্কে বিএমপি ট্রাফিক !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: বিএমপি কমিশনার ও উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) এর সুদক্ষ নির্দেশনায় সম্প্রতি ভালো ভাবেই চলছিল বিএমপি ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু ঘুরেফিরে আবারো বিতর্কের মুখে ট্রাফিক পুলিশ। এসব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বেশ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্ট। মোটর আরোহীকে মারধর, বাস ড্রাইভারদের গালাগাল, বিট তোলার অভিযোগ কাটিয়ে ওঠার পর এবার পাওয়া গেল আরেকটি গুরুতর অভিযোগ। দোকানে শ্যাম্পুর দাম শ্যাম্পুর দাম কম না রাখায় বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট নগরের বান্দরোডে এক ফার্মেসি দোকানিকে হয়রানিমূলক মামলা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (৮ মে) রাত ৮টার দিকে মোটরসাইকেল অবৈধ পার্কিংয়ের অভিযোগে ফার্মেসি দোকানি খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। খলিলুর রহমানের নগরীর বান্দ রোডে ‘হাওলাদার ফার্মেসি’ নামে একটি ফার্মেসি রয়েছে।

অভিযুক্ত সার্জেন্টের নাম শহীদুল ইসলাম সজল। তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশে সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত।

হাওলাদার ফার্মেসির মালিক খলিলুর রহমানের অভিযোগ, শনিবার বেলা ১১টার দিকে তার দোকানে আসেন সার্জেন্টের শহীদুল ইসলাম সজল। তিনি এ সময় নাপা সিরাপ, এলার্জির ট্যাবলেট (ক্লিনডাসিন) ও নিজোডার নামে একটি শ্যাম্পু কেনেন। দাম পরিশোধের সময় তিনি শ্যাম্পুর দাম কিছু টাকা কমিয়ে রাখতে বলেন। আমি শ্যাম্পুর দাম ১০ টাকা কমিয়ে রাখি। কিন্তু তিনি আরও কমাতে অনুরোধ করেন। এরপর আমি তার কাছে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং দোকান থেকে চলে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

খলিলুর রহমান বলেন, এ ঘটনার জের ধরে রাত ৮টার দিকে দোকানের সামনে এসে হাজির হন সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম। সড়কের পাশে দোকানের সামনে আমার সিডিআই-১০০ মোটরসাইকেলটি পার্ক করা ছিল। এসময় সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম জানতে চান মোটরসাইকেলটি কার? এভাবে সড়কে কেন পাকিং করা হয়েছে? তাকে আমি বলি- মোটরসাইকেলটি আমার। চুরি যাওয়ার ভয়ে দোকানের সামনে রেখেছি। তাছাড়া এতে যানবাহন চলাচল বা পথচারীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলেও তাকে জানাই। এ কথা বলার পর তিনি মোটরসাইকেল অবৈধ পার্কিংয়ের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে তিন হাজার টাকার মামলা দেন। একই সময় আমার ফার্মেসির সামনে মোটরসাইকেল রেখে এক ক্রেতা আমার কাছ থেকে ওষুধ কিনছিলেন। তাকেও মোটরসাইকেল অবৈধ পার্কিং করার অভিযোগে তিন হাজার টাকার মামলা দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের পাশে দোকানের সামনে আমি মোটরসাইকেল রেখে আসছি। আগে কোনো ট্রাফিক পুলিশ বা সার্জেন্ট কোনো অভিযোগ করেননি। কিন্তু আজ সার্জেন্টের শহীদুল ইসলামের কাছে শ্যাম্পু বিক্রির সময় কম টাকা না রাখা আমার কাল হয়েছে। আমার দোকানের আশেপাশের সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পার্ক করা ছিল। তবে সার্জেন্ট শহিদুল ইসলাম সেদিকে ফিরেও তাকাননি। তিনি ব্যক্তি আক্রোশ থেকে আমি ও আমার এক ক্রেতার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ট্রাফিক সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম সজল বলেন, আজ দুপুর দুই থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত নগরীর আমতলা মোড় মেডিকেলের সামনে আমার ডিউটি ছিল। আজ রাস্তায় যানবাহনের চাপ ছিল। তাছাড়া নগরের ব্যস্ততম একটি সড়ক বান্দ রোড। সেখানে রাত ৮টার দিকে সড়কের পাশে দু’টি মোটরসাইকেল অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা ছিল। এতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে দু’জন মোটরসাইকেলের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।

ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে মামলা দেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম বলেন, আজ (শনিবার) সকালে ও সন্ধ্যায় মেডিকেলের সামনের কয়েকটি দোকান থেকে আমি ওষুধ কিনেছি। কিন্তু কোন দোকান থেকে কিনেছি, দোকানের নাম বা মালিকের নাম আমার মনে নেই। সকালের দিকে ওষুধ কেনার সময় ফার্মেসিতে থাকা এক ব্যক্তিকে শ্যাম্পুর দাম কিছু কমিয়ে রাখতে বলেছিলাম। দোকানে থাকা ওই ব্যক্তি ১০ টাকা কমিয়ে রেখেছেন। এনিয়ে তখন আর কিছুই হয়নি। যারা এখন অভিযোগ তুলছেন- তারা নিজেদের দোষ আড়াল করার চেষ্টা করছেন। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, হয়রানি জন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনা খতিয়ে না দেখে কারো ওপর দোষ চাপানো ঠিক হবে না।

 

তথ্যসূত্রঃ jagonews24

সর্বশেষ