১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রকাশ্যে ৩ কিশোরকে এলোপাতাড়ি কোপাল সন্ত্রাসীরা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর বিনোদন কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তিন কিশোরকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে বাংলাবাজার এলাকার উঠতি সন্ত্রাস অলি এবং রাফসানের নেতৃত্বে ১০/১৫ যুবক-কিশোর একত্রিত হয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে তাদের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা অনিকসহ (১৮) সম বয়সি তার দুই বন্ধু সিয়াম এবং রাজাকে জনবহুল ওই এলাকায় মারধর করাসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকাশ্য এই রোমহর্ষক সন্ত্রাস বিনোদন কেন্দ্র ঘুরতে আসা অনেকে প্রত্যক্ষ করলেও তিন কিশোরকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনি। বরং অলি এবং রাফসানসহ সকলে বীরদর্পে স্থান ত্যাগের পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তিন কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একটি অস্ত্রধারী যুবক-কিশোর গ্রুপ তিনজনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়েছে, যা স্বচোখে দেখে অনেকেই হতবাক-বাকরুদ্ধ। অনেকে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করার কথা প্রথমে ভাবলেও পরবর্তীতে সকলেই ধারালো অস্ত্রের সম্মুখে যেতে অপরাগতা প্রকাশ করে। ফলে সন্ত্রাসী গ্রুপটি সুযোগ পেয়ে তিনটি ছেলেকে ইচ্ছেমত কুপিয়েছে। এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। এরআগে রাফসান এবং অলির নেতৃত্বে গ্রুপটি কোনো একটি সড়ক হয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ঢুকে পড়ে যেখানে অনিক, সিয়াম ও রাজা অবস্থান করছিলেন। তখন সকলের হাতে ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র দেখে উদ্যানে উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় নিজেদের রক্ষায় এক একজন এক এক দিকে দৌঁড়ে ছুটতে থাকে।

তবে কি নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রে এই রক্তপ্রবাহ সে সম্পর্কে কেউ বিস্তারিত বলতে না পারলেও গুরুতর আহত অনিক মৃধার পিতা মান্না সুমন দাবি করেছেন, তার ছেলের বন্ধু সিয়ামের সাথে অলি এবং রাফসানের পূর্বেকার বিরোধ ছিল। সেই বিরোধীয় জেরে অনিকসহ তার আরও দুই বন্ধুকে একা পেয়ে কুপিয়েছে রাফসানসহ তার সঙ্গীরা।

মান্না সুমন জানান, তার ছেলে এবং সিয়ামকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এছাড়া রাজাকে বেধরক পিটিয়েছে। তাদের তিনজনকেই উদ্ধার করে শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে এদের মধ্যে অনিকের অবস্থা গুরুতর, জানান সুমন।

শনিবার সন্ধ্যা রাতে জনবহুল এলাকায় রক্তারক্তির এই ঘটনাকে আহতদের পরিবারের স্বজনেরা আগেকার বিরোধ বললেও কারও অভিমত যারা সংঘাতে জড়িয়েছে, তারা সকলেই একত্রে চলাফেরা করে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, অনিক এবং তার বন্ধুদের কোপানোর নেপথ্যে কোনো পূর্ববিরোধ আছে কী তা জানা নেই। তবে কদিন আগেও দুটি পক্ষকে এক সাথে চলতে দেখা যায়। এমনকি শনিবার সন্ধ্যায় রক্তপাতের কিছুটা আগেও তারা সকলে একটি স্থানে ছিলো।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সংঘাতের নেপথ্যে মাদক নিয়ে বিরোধ আছে। মূলত মাদককে কেন্দ্র করেই দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব শুরু হয়, যার সবশেষ পরিণতি রক্তপাত। অবশ্য সংশ্লিষ্ট কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশও প্রাথমিকভাবে এমনটি অনুমান করছে।

কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই আরাফাত রহমান হাসান জানান, বঙ্গবন্ধু উদ্যানে কোপাকুপির খবর পেয়ে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু প্রবল বর্ষণের কারণে সেখানে পৌছাতে বিলম্ব হয়। এর আগেই অনিকসহ আহতদের উদ্ধার শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অলিকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেছে আহতদের স্বজনেরা।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল এবং মেডিকেল উভয় স্থান পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের স্বজনদের সাথে কথা বলেছে। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে, সেই সাথে জড়িতদেরও গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।’

সর্বশেষ