সেলিম শিকদার: উজান থেকে নেমেআসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষনে উজানে বিভিন্ন নদ-নদীর পাশাপাশি সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী ও শাখা নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধ পাওয়ায় নদীতীরবর্তী বিভিন্ন স্থান ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও পানিবৃদ্ধির সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। এতেকরে বন্যাদুর্গতরা অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে শহর রক্ষাবাঁধে,উঁচু রাস্তায়, বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসাসহ খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েপরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গবাদি পশুপাখি নিয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন।
এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছেন- গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার কমেছে,
গত ২৪ ঘন্টায় ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যমুনার পানি কমলেও অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও চলনবিল এলাকায় পানি প্রায় আগের অবস্থাতেই রয়েছে। এর মধ্যেই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, চৌহালী, শাহজাদপুর সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ১ লাখ মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
গত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে গত ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যমুনা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদীতীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু রাস্তায়,
বিভিন্ন স্কুল,মাদ্রাসাসহ খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গবাদি পশুপাখি নিয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন যাবত যমুনায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।
তবে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার কমেছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি এই মুহুর্তে আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
যমুনা নদীর পানি কমে এখন বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর ও শাহজাদপুরের কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। তিনি আরও জানান, জেলার ৫টি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমরা নিয়মিত বন্যা দূর্গতদের খোঁজ খবর রাখছি। এর মধ্যে নদীভাঙন ও নিম্নাঞ্চল এলাকা গুলোতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলায় ৭২১ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুত রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।