নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বঙ্গবন্ধু হলে এক ছাত্রকে রাতভর কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মুকুল আহমেদ নামে ইংরেজি বিভাগের ১০ম ব্যাচের ওই ছাত্রকে বেদম মারধর করেছে একই বিভাগের সিনিয়ররা। এতে ওই ছাত্রের একটি হাত ভেঙে গেছে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) মুকুলকে সহপাঠীরা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত তাঞ্জিদ মঞ্জু ও সিহাব উদ্দিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
শুক্রবার রাতে যোগাযোগ করা হলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, তিনি জেনেছেন যে বঙ্গবন্ধু হলে এক ছাত্রকে মারধর করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতাও পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রকে দেখতে প্রভোস্ট হাসপাতালেও গিয়েছিলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল জানান, তিনি মেসেঞ্জারে জুনিয়রদের বুঝিয়েছেন যে, ৮ম ব্যাচের ছাত্ররা বাড়াবাড়ি করছেন। তাদের ডাকে কারও সাড়া দেওয়া উচিত হবে না। এমন অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ৮ম ব্যাচের তাঞ্জিদ মঞ্জু এবং সিহাব উদ্দিন তাকে তাদের ৪০১৮ নং কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত আটকে রেখে নির্যাতন করেন। পাইপ দিয়ে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন ওই ছাত্র। সকালে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে গোপনে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে, কিন্তু এখন পঙ্গু হতে চলেছেন। অথচ তার পাশে কেউ নেই। কী জবাব দেবেন পরিবারকে!
অভিযুক্ত সিহাব উদ্দিনের ব্যবহৃত ফোন নম্বরে কল করা হলে, ওপাশ বলা হয়- তিনি সিহাব নন, ভুল নম্বরে কল এসেছে। মঞ্জুর ব্যবহৃত নম্বরে কল করা হলে ওপার থেকে বলা হয়, তিনি ফোনের কাছাকাছি নেই।
ক্যাম্পাসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি শেরে বাংলা হলে রাতের আঁধারে হামলার ঘটনায়ও নেতৃত্ব দিয়েছেন মঞ্জু ও সিহাব। তারা ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেন বলেন, ছাত্রকে মারধরের ঘটনা তার জানা নেই। সিকিউরিটি গার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাকে জানানো হয়েছে, তার হলে এ রকম কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পরে রাতে আবার যোগাযোগ করা হলে প্রভোস্ট বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্র মুকুল দুপুরে হল থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছেন বলে তিনি জেনেছেন।