আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:: বড় ভাইকে বাড়ি ছাড়া করতে মানষিক প্রতিবন্ধি খোকন মোল্লার স্ত্রী মায়া বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেবর মোহন মোল্লা ও তার সহযোগীরা কুপিয়ে দুই হাত ও পায়ে গুরুত্বর জখম করেছে। তাকে স্বজনরা উদ্ধার করে মঙ্গলবার রাতে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বুধবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী গ্রামে।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তর টিয়াখালী গ্রামের মানষিক প্রতিবন্ধি খোকন মোল্লা ও তার ছোট ভাই মোহন মোল্লা একই বাড়ীতে বসবাস করে। মানষিক প্রতিবন্ধি খোকনের সম্পত্তির উপর ছোট ভাই মোহন মোল্লার নজর পড়ে। গত ৩ বছর ধরে বড় ভাইয়ের পরিবারকে বাড়ী থেকে তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল করে আসছে মোহন মোল্লা, স্ত্রী মাহিনুর (মনিরা) ও তার সহযোগীরা এমন অভিযোগ প্রতিবন্ধির স্ত্রীর মায়া বেগমের। কিন্তু তাদের এমন কু-কৌশল মায়া বেগম প্রতিহত করে আসছে। এতে ভাবির উপর ক্ষিপ্ত হয় মোহন মোল্লা। গত বছর বাড়ী থেকে তাড়ানোর জন্য মায়া বেগমকে দু’দফায় মারধর করে তারা। কিন্তু স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রতিবন্ধি পরিবারকে তাড়াতে পরেনি। মঙ্গলবার রাতে মায়া বেগম ঘরের সামনে উঠানে কাজ করতে ছিল। এমন মুহুর্তে মোহন মোল্লা, তার স্ত্রী মাহিনুর, সহযোগী হাবিব বয়াতি ও রাহিমা বেগম এসে মায়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। তারা মায়াকে কুপিয়ে দুই হাত ও দুই পায়ে গুরুতর জখম করে। মায়ার ডাক চিৎকার তার শিশু কন্যা খুকুমনি এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় বুধবার মায়ার বাবা আদেল উদ্দিন সিকদার বাদী হয়ে মোহন মোল্লাকে প্রধান আসামী করে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেছে।
আহত মায়া বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী মানষিক প্রতিবন্ধি। আমার স্বামীর জমি ও বাড়ী দখলের জন্য তার ছোট ভাই মোহন মোল্লা ও তার স্ত্রী মাহিনুর বিভিন্ন চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু আমার কারনে তারা পারছে না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে হত্যার জন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, ওরা আমার ঘরে ছোট বোনের রেখে যাওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
মোহন মোল্লা টাকা নেয়া ও মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে তার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, মায়া বেগমের দুই হাতে ও পায়ে গুরুতর জখম রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে।