বরগুনা প্রতিনিধি :: বরগুনা জেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে মেয়ে জামাইকে টানা দুইদিন শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, প্রায় আড়াই বছর পূর্বে পিরোজপুর জেলাধীন নাজিরপুর উপজেলার ছোট আমখোলা গ্রামের আ. ওহাব শেখের ছেলে মো. আবুল খায়ের (২৫) বরগুনায় বেড়াতে আসলে পশ্চিম বুড়িরচর গ্রামের পনু সরদারের মেয়ে মোসা. মৌসুমি আক্তার (১৬) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পরে পারিবারিকভাবে ঢাকায় তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। মেয়ের বয়স না হওয়ায় বিবাহটি কাবিনভুক্ত হয়নি। বিয়ের পরে ওই দম্পতির ঘরে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। যার বয়স বর্তমানে আট মাস।
ভুক্তভোগী আবুল খায়ের জানান, বিয়ের পরে আমার স্ত্রী আমার বাড়িতেই ছিলো। গত দুই মাস আগে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সপ্তাহ অতিবাহিত হলে আমি আমার বাড়িতে চলে আসার জন্য ফোন করি আমার স্ত্রীকে। গত ১৫ অক্টোম্বর আমার শ্বশুর বাড়ি পশ্চিম বুড়িরচর আসলে শাশুড়ির অসুস্থতার অজুহাতে স্ত্রীকে রেখেই আমার কর্মস্থল ঢাকায় চলে যেতে হয়েছে। নানা তালবাহানার পরে আমি গত ৮ নভেম্বর আবারো আমার শ্বশুর বাড়ি বরগুনায় স্ত্রী মৌসুমিকে নিতে আসি। সন্ধ্যায় আমার শ্বশুর বাড়ি পশ্চিম বুড়িরচর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর পরপরই হঠাৎ করেই আমার বড় সুমন্দি গাভের লাঠি দিয়ে আমাকে বেধরকভাবে পিটিয়ে ঘরের খাটের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে।
এ সময় শাশুড়ি খাদিজা ও আমার স্ত্রীও আমাকে মারধর করে।
টানা দুই দিন আটকের পরে বরগুনা থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ৯ নভেম্বর ভোর রাতে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)র নেতৃত্বে এস আই কাজী ওবায়দুল কবীর ঘটনাস্থলে গিয়ে আবুল খায়েরকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে আবুল খায়েরকে উদ্ধারের পাশাপাশি সুমন্দি আ. রহমান ও শাশুড়ি খাদিজাকে আটক করে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী মৌসুমিকেও থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে শ্বশুর পনু সিকদার ঢাকায় তার কর্মস্থলে রয়েছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবুল খায়ের (জামাই) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। যেটা আমরা আমলে নিয়ে আইনানুগভাবে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।