২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরগুনা-১ আসনে শম্ভুর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ টুকু

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনা-১ আসনে (সদর, আমতলী, তালতলী উপজেলা) এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু। গত এক বছর ধরে এলাকায় গণসংযোগ করে সাড়া ফেললেও তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি এনিয়ে সাতবার মনোনয়ন পেলেন। ২০০১ সালে তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের কাছে নির্বাচনে হেরে যান।

বরগুনার এই সংসদীয় আসনে শুধু আওয়ামী লীগ ও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থী নয়, বিভিন্ন দল থেকেও প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন- জাকের পার্টির মো. জাহাঙ্গীর কবির, এনপিপি থেকে মাহবুবুর রহমান অভি, বিএনএম থেকে মো. মাসুদ কামাল, জাতীয় পার্টির মো. খলিলুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির মো. ইউনুস সোহাগ, তরিকত ফেডারেশনের শাহা মো. আবুল কালাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার ফোরকান।

আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় বার সংসদ সদস্য হলেও গত ১৫ বছরে এলাকার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেননি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। উপরন্তু সমুদ্র বন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, মেডিক্যাল কলেজ, রপ্তানিমুখী শিল্পাঞ্চল (ইপিজেড), পায়রা নদীতে সেতুসহ গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পগুলো পার্শ্ববর্তী জেলা পটুয়াখালীতে বাস্তবায়ন হওয়া এবং নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ধীরেন্দ্র দেবনাথের জনসমর্থন অনেকাংশে কমেছে। একইভাবে নির্বাচনী এলাকার অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো নাজুক হওয়ায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে। দলের মধ্যেও বহুমুখী বিভাজন থাকায় এবার ধীরেন্দ্র দেবনাথ সহজে জিতে আসতে পারবেন না বলে মনে করেন তারা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক একাধিক নেতারা বলছেন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনে গোলাম সরোয়ার টুকু বড় চ্যালেঞ্জ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি ও পরিবার কেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে মুক্তি চায় জেলা আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই আমরা বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী আবার তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা শুধুমাত্র নৌকাকে বিজয়ের জন্য মাঠে নেমে কাজ করেছি। এবারও আমরা আশা করেছিলাম তাকে যেন মনোনয়ন দেওয়া না হয়। কিন্তু কোন জাদুর বলে আবারও তিনি মনোনয়ন পেলেন আমাদের জানা নেই। আমরা এবার আর তার জয়ের জন্য কাজ করবো না। দল থেকে বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা যাবে। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের জন্য অনেকেই কাজ করবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীও আওয়ামী লীগের নেতা। বিএনপি নির্বাচনে আসলে তখন নৌকার জয়ের জন্য সবাই এক থাকতাম দলের স্বার্থে।

জেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু দল স্বতন্ত্র প্রার্থীর পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আমি এখন জনতার মনোনীত প্রার্থী। আধিপত্যবাদী রাজনীতির অসুস্থ ধারা, উন্নয়ন বঞ্চনা এবং দুর্নীতির ভয়াল গ্রাস থেকে বরগুনার মানুষ মুক্তি চায়। মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ মানুষ ও দলের অগণিত নেতাকর্মী আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করা ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন মানেই চ্যালেঞ্জ। দল থেকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি নির্বাচনে আবারও অংশগ্রহণ করছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকতেই পারে। এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি কারোর ওপরে প্রভাব খাটাবো না। দল চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহই নির্বাচন হবে।

উন্নয়ন বঞ্চনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের মতো বরগুনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ জেলা না। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি। এখানে আধুনিক হাসপাতালসহ নানা উন্নয়ন হয়েছে। বরগুনায় ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন হয়েছে।

সর্বশেষ