৩রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে জমি দখলের মিশনে চারা গাছ উপড়ে নিল প্রতিপক্ষরা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজাচর গ্রামে ৯৭ শতাংশ জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন চার ব্যাক্তি। ওই জমির পাশে দিবাকর রায় দুলা গং নামে এক প্রভাবশালী হিন্দু পরিবারের বাড়ি হওয়ায় তাদের সেই জমিতে বাড়ি নির্মাণে বিভিন্নভাবে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। এতে করে জমি দখলে থাকলেও ভোগ করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা। সম্প্রতি ওই জমিতে রোপনকৃত ১৬০ টি চারা গাছ উপড়ে ফেলে ২ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেছে প্রতিপক্ষ। এনিয়ে গতকাল রোবাবার (৩০ জুন) কোতয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী আবুল কালাম।

ভুক্তভোগীরা হলেন- চরমোনাই ইউনিয়নের ডিংগামানিক গ্রামের আবুল কালাম হাওলাদার, বিলকিচ বেগম, রুহুল আমিন খন্দকার ও আয়শা আক্তার।

অভিযুক্তরা হলেন- রাজাচর গ্রামের মৃত দেবন্দ্রনাথের ছেলে দিবাকর রায় দুলা, অহিদ্র রায়ের ছেলে সুমন রায়, ওপেন ধোপার ছেলে উজ্জল ধোপা ও দিবাকর রায় দুলার ছেলে দিপ্ত।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- মৃত দেবন্দ্রনাথের ছেলে মৃত দিলিপ কুমার রায় রাজারচর মৌজার জে.এল নং- ৯১, ১৯৫২ নং এস.এ খতিয়ানে ১৬, ১৯, ২০ ও ১০৪ নং দাগে সাফ কবলা দলিলে ১৩৬ শতাংশ জমির মালিক। সে জীবিত থাকতে সেখান থেকে ৯৭ শতাংশ আবুল কালাম হাওলাদার, বিলকিচ বেগম, রুহুল আমিন খন্দকার ও আয়শা আক্তারের কাছে বিক্রি করে বুঝিয়ে দেন। ওই সম্পত্তি দীর্ঘদিন যাবৎ জোরপূর্বক দখল নেওয়ার পায়তারা করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আসছে অভিযুক্তরা। এই জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় তাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করাসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি প্রদান করে আসছে। দীলিপ কুমার রায় মৃত্যু বরণ করার পর তার স্ত্রী আরতী রায় ওই জমি আমিন দ্বারা পরিমাপ করে ভুক্তভোগীদের বুঝিয়ে দেয়। তারা ওই জমিতে ঘর উত্তোলন করে এবং জমির চারপাশে গাছপালা রোপন করে ভোগ দখল শুরু করে। গত ২৯ জুন রাতে অভিযুক্তরা লোকজন নিয়ে তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তির মধ্যে অনাধিকার প্রবেশ করে জমিতে লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির ১৫০/১৬০টি চাড়া গাছ উঠিয়ে নিয়া যায় এবং ভেঙে ফেলে ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়- মৃত দেবন্দ্রনাথের ছেলে মৃত দিলিপ কুমার রায় আবুল কালাম হাওলাদার, বিলকিচ বেগম, রুহুল আমিন খন্দকার ও আয়শা আক্তারের কাছে ৯৭ শতাংশ জমি বিক্রি করে বুঝিয়ে দেন। বাকি জমির ৫ শতাংশ নিজে রেখে ৩৪ শতাংশ জমিও অন্য মানুষের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর দিলিপ কুমার রায় মৃত্যুবরণ করলে আবুল কালাম গংদের জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পরে দিবাকর রায় দুলা গংদের। সেই জমি বাগিয়ে নিতে শুরু হয় নাটকীয়তা। প্রথমে ওই জমি ক্রয়ের বায়না করেন দিবাকর রায় দুলা গংরা। আবুল কালাম গংকে জমি ক্রয়ের প্রস্তাব দেন দিবাকর রায় দুলা গংরা। এতে আবুল কালাম গংরা রাজি হলে তাদের ক্রয়কৃত দাম দিতে চান দিবাকর রায় দুলা গং। কিন্তু জমির দলিলের বাড়তি খচর দিতে রাজি না হলে ওই দামে জমি বিক্রি করবে করবে বলে জানান আবুল কালাম গং। এরপর থেকে ওই বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আবুল কালাম গংকে ওই জমির কাছে ঘেসতে দেন না দিবাকর রায় দুলা গংরা। সম্প্রতি ২ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রজাতির ১৬০ টি চারা রোপন করে আবুল গংরা। ২৯ জুন রাতে সেই গাছগুলো উপড়ে ফেলে এবং ভেঙে ফেলে অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে আবুল কালাম গং বলেন- আমরা দিলিপ কুমার রায়ের সাফ কবলা দলিল মূলে মালিকানা ১৩৬ শতাংম জমির মধ্যে ৯৭ শতাংশ ক্রয় করি। জমি রেজিস্ট্রি করে আমরা দখলে যাই এবং ২ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রজাতির ১৬০ টি চারা রোপন করি। ২৯ জুন রাতে আমাদের চারা গাছগুলো উপড়ে ফেলে এবং ভেঙে ফেলে দিবাকর রায় দুলা, সুমন রায়, উজ্জল ধোপা ও দিবাকর রায় দুলার ছেলে দিপ্ত। আমরা এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে দিবাকর রায় দুলার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আরিচুল হক বলেন- অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ