৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে তারা ছিনতাই করতো ডিবি পরিচয়ে

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বাণী ডেস্ক।।
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে থ্রি হুইলার ছিনতাই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল।

পুলিশ জানায়, গত ১৩ জুন সকালে থ্রি হুইলার (অটোগাড়ি) নিয়ে বাসা থেকে বের হয় বাবুগঞ্জ থানার রাজকর এলাকার বাসিন্দা কাজী কামাল।

ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে কামাল বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানার বকুলতলা এলাকার একটি ইটের ভাটার সামনে অটোগাড়িটি নিয়ে এলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আসামি ধরার কথা বলে সেটিতে ওঠে।

এরপর ওই ব্যক্তি থ্রি হুইলারটিসহ কামালকে ভয় দেখিয়ে প্রথমে এয়ারপোর্ট মোড়ে ও পরে দোয়ারিকা মধ্য ফেরিঘাট এলাকায় নিয়ে যায়।

বিকেল ৫টার দিকে সেখানে চারজন ব্যক্তি মিলিত হয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয় এবং কামলাকে এক প্যাকেট বিস্কুট ও পানির বোতল দিয়ে তা খেতে বলে। সরল বিশ্বাসে তা খেলে কিছুক্ষণ পরেই কামালের মাথায় হালকা ঝিম ঝিম দেখা দেয় এবং ঘুম ঘুম ভাব এসে পড়ে।

বিষয়টি বিপদজনক বুঝতে পেরে কামাল অটোগাড়িটি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে ডিবি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কামালের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে মারধর করে রাস্তায় ফেলে দিলে কামাল চিৎকার দেয়। এতে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের মোটরসাইকেল ফেলে অটোগাড়ি ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় কামালের স্ত্রী মোসা. তানিয়া গত ১৭ জুন এয়ারপোর্ট থানায় চারজন অজ্ঞাতকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরপরই থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করার পাশাপাশি অভিযানে নামে।

অভিযানে নেমে ১৭ ও ১৮ জুন ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে গোপালগঞ্জের খান্দারপাড় এলাকার মো. সাখায়েত মুন্সি (৪০) ও ফরিদপুরের সালতা থানার উত্তর চন্ডীবর্ধী এলাকার মো. জহির হাসান মোল্লা (৩৫) কে ফরিদপুর জেলা ভাঙ্গা থানার ভাঙ্গা বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

অপরদিকে পটুয়াখালী সদর থানার শিমুলবাগ এলাকার মো. সোহেল হাওলাদার (৪০) কে বরিশাল নগরের কোতোয়ালি মডেল থানার খেয়াঘাট এলাকা থেকে এবং মাগুরা জেলার মোহাম্মাদপুর থানার উত্তর বিশ্বাসপাড়া এলাকার মো. মহসীন শেখ (৪৮) ও মো. আমিরুল ইসলাম (৪০) কে মাগুড়া জেলার মোহাম্মাদপুর থানার বিনোদপুর বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

এদের মধ্যে মো. সোহেল হাওলাদার বরিশাল নগরের বাজার রোড এলাকা এবং মো. সাখায়েত মুন্সি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার হুগলাডাঙ্গা ও ফরিদপুর সদর থানার গোয়ালচামট এলাকাতে বসবাস করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সাখায়েত মুন্সি এ চক্রের গ্যাং লিডার। আর জহির হাসান মোল্লা নিজেকে ডিবি পুলিশসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা পরিচয়ে টার্গেটকৃত গাড়িতে ওঠার কাজটি করেন।

এছাড়া সোহেল হাওলাদার পেশায় মেকানিক হওয়ায় সে চোরাই বা ছিনতাই টিমের গাড়ি মেরামত ও যন্ত্রাংশ আলাদা করার কাজ করে থাকে এবং বাকি দুজন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ করেন।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আন্তঃজেলা চোর চক্রের এ সদস্যরা জানিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডজনেরও অধিক মামলা রয়েছে এবং ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে এ চক্র একের পর এক ভুক্তভোগীদের স্বপ্ন ছিনিয়ে নিচ্ছে।

সর্বশেষ