১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
রাঙ্গাবালীতে শিক্ষা সনদে বানান ভুল হওয়ায় বিপাকে শিক্ষার্থী ৪২ জনে ৪০ জন এ প্লাস : ভোলা তা’মিরুল উম্মাহ মাদরাসা বরিশালে থেমে থাকা মাইক্রোবাসে আ*গুন, নামাজে থাকায় রক্ষা পেল বরযাত্রী গৌরনদীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নলছিটি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মনিরুজ্জামান মনিরের গণজোয়ার।। নলছিটিতে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে রাতভর নি*র্যা*তন, স্বামী কারাগারে এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বাধিক অগ্রাধিকার পাচ্ছে : অর্থ প্রতিমন্ত্রী এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন শুরু আজ থেকে, যেভাবে করবেন ১৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে কুয়াকাটা যাচ্ছে রোভার স্কাউটের ৪ সদস্য বরিশাল নগরীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধ*র্ষণ

বরিশালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মাছ-মাংস ছুঁতে পারছে না সাধারণ মানুষ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বাজারে পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি থামার কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এরমধ্যে ভালো খাবার তো এখন নাগালের বাইরে। অবস্থা এমন যে, মাছ-মাংস ছুঁয়ে দেখতে পারছেন না মধ্য ও নিম্নবিত্তরা। ফলে বিপাকে পরেছেন তারা। এসবের বাইরে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। আর চিনি, আটা, ময়দা বাড়তি দামে আটকে রয়েছে। এরমধ্যে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম।

শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে বরিশাল নগরীর নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম প্রতিকেজি ১১শ টাকা। আর বকরির মাংস ৯০০ টাকা। এদিকে টানা তিন সপ্তাহ ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর হালিপ্রতি ডিমের দাম ৪৮-৫০ টাকা।

সেই উত্তাপ এখন ছড়িয়েছে নগরীর মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি পদের (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দাম বেড়েছে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।

নতুন বাজারে কথা হয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের মতো হিসাব করে চলা মানুষ আর গরুর মাংস খেতে পারবে না। কমদামে ব্রয়লারও এখন কেনা যায় না। মাছের দামও বেড়েছে। আমরা এখন কী খাবো?

তিনি বলেন, ইচ্ছা থাকলেও মাছ-মাংস সন্তানের মুখে দিতে পারছি না। হিসাবের বাইরে গিয়ে কিনলে, অন্য খরচে টান পড়ছে। আমার জীবনে সব পণ্যের দাম একসঙ্গে এভাবে বেড়ে যাওয়া কখনো দেখিনি।

নথুল্লাবাদ বাজারের মাংস বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ছাগলের মাংসের দাম ১০০ থেকে দেড়শ টাকা বেড়েছে। মানুষ মাংস কিনছে কম। বিশেষ করে খাসির মাংসের ক্রেতা একদমই নেই।

গরুর মাংস বিক্রেতা শাশিম বলেন, গত মাসে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এখন ৫০ টাকা বাড়তি। সপ্তাহখানেক আগেও ২০-৩০ টাকা কমে বিক্রি করা গেছে। এখন যাচ্ছে না।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের পাঙাশ-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হতো ১৫০-১৬০ টাকা, যা এখন ১৮০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। অন্যদিকে তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা। যা আগে ১৮০-২০০ টাকায় কেনা যেত।

বাজারে সাধারণত গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা ব্রয়লার মুরগি ও মাছের ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে অনেকে এসব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পোর্টরোড বাজারে রিকশাচালক লিটন বলেন, একটা দিন যে ভালো-মন্দ খাবো এখন সেই উপায় নেই। এগুলো দেখার কেউ নেই। আমাদের নিয়ে সরকার ভাবে না।

তিনি বলেন, দিনে ৬০০-৭০০ টাকা কামাই, এরমধ্যে যদি ২৫০ টাকায় মাছ কিনি, তাহলে অন্য খরচ কী দিয়ে হবে?

ওই বাজারের মাছ বিক্রেতা রফিকুল জানান, তার দোকানে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকায়। যা আগে ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন। অন্যান্য চাষের মাছগুলোও বেশ বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ২৮০-৩২০ টাকা ছিল।
অন্যদিকে বাজারে দেশি প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি, বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০-৮০০ টাকা। যা ছিল ৬০০-৬৫০ টাকার মধ্যে। তবে এসব মাছ চাষের হলেও কিছুটা কম দামে মিলছে।

মাছের আরেক বিক্রেতা অলি বলেন, সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারেও। সে কারণে দাম বেড়েছে।

অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল, চিনি, আটা, ময়দা, গুঁড়া দুধসহ অন্যান্য বেশকিছু পণ্য বাড়তি দামে আটকে রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ৯০-৯৫ টাকা ছিল। একইভাবে প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ৯৫-১০০ এবং মাসকলাইয়ের ডাল ১৫৫-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে শীতের সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। আর গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি এসেছে তাতে হাত দেওয়ার অবস্থা নেই। প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা ও রসুন ১৬০-২২০ টাকা দরে।

সর্বশেষ