অনলাইন ডেস্ক :: ঈদ পরবর্তী সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনে সোমবার বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে শত শত মানুষ। দূরপাল্লার সকল প্রকার বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকা যাচ্ছেন মানুষ। এতে করে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বাড়ছে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়।
সোমবার সকালে নগরের নথুল্লাবাদ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শত শত মানুষ ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। নতুল্লাবাদে পুলিশের চেকপাস্ট পার হতে পারলেই মিলছে কোনো না কোনো যানবাহন।
সরকার ঘোষিত টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনে যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিলেও বরিশালের মহাসড়কে হচ্ছে তার উল্টো।
নগরের কাশিপুর চৌমাথা এলাকায় সিএনজি, মাহিন্দ্র, অটো ও মোটরসাইকেলযোগে মাওয়া যাচ্ছে মানুষ। সেখান থেকে আবার বিভিন্ন মাধ্যমে ঢাকায় প্রবেশ করছেন তারা।
ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া আতিকুর রহমান জানান, তিনি পটুয়াখালী থেকে পণ্যবাহী একটি ট্রাকে বরিশালে এসেছেন। এখন নথুল্লাবাদ থেকে সিএনজিযোগে মাওয়া যাবেন। জরুরি কাজের জন্য বাড়তি ভাড়া দিয়ে তাকে যেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিএনজিতে মাওয়া যেতে ৭ থেকে ৮শ টাকা ভাড়া দিতে হয়। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে যে মোটরসাইকেল রয়েছে তাতে ঝুঁকি বেশি আর ভাড়াও দ্বিগুণ।
আনোয়ার হোসেন নামের আরেকজন রওনা হয়েছেন মোটরসাইকেলে। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চালকের সাথে তার কথা হয়েছে কিন্তু ভাড়ায় মেলেনি। তাই সিদ্দিকের মোটরসাইকেলে ৬শ টাকায় উঠেছেন।
এভাবেই বাড়তি ভাড়া দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ঢাকা যাচ্ছেন মানুষ। এক একটি মোটরসাইকেলে তিনজন করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
সিএনজি চালক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ভাই লকডাউনে সব গাড়ি বন্ধ। ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টে আছি। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি থামায় তারপরও যাত্রী পরিবহন করছি পেটের দায়ে। এছাড়াও ব্যাটাারিচালিত রিকশা, ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি অনেকে আবার হেঁটে হেঁটে রাস্তা কমানোর চেষ্টা করছেন।
তবে নগরের নথুল্লাবাদে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের চেকপোস্টে পুলিশের ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ করা গেছে।
এদিকে, লকডাউনের চতুর্থ দিনে রাস্তায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা, মোটরসাইকেল, ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। বড় ধরনের শপিংমল বন্ধ থাকলেও সড়কের পাশে অস্থায়ী দোকান বসেছে। এতে অবাধে চলছে কেনাবেচা। অনেকে আবার দোকান বন্ধ রেখে দোকানের সামনে টেবিল বসিয়ে বেচা বিক্রি করছেন।
করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউনের শুরু থেকেই বরিশালের জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তাদেরকে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮৪১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৭৫২ জনে।
এছাড়াও করোনা ও উপসর্গ নিয়ে বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।