২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বরিশালে ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার চরকাউয়ায় যুবলীগ নেতা খান মামুনের গণসংযোগ বাংলাদেশে বর্তমানে ভারতের তাবেদার সরকার শাসন করছে : বরিশালে ভিপি নুর বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ, ইমামের কক্ষে আগুন উজিরপুরে ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার কাউখালীতে পাটি খাতে রূপালী ব্যাংকের ক্লাস্টার ভিত্তিক ঋণ বিতরণ বিআরডিবি'র কার্যক্রম পরিদর্শনে সচিববৃন্দ মনপুরায়, কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও উঠান বৈঠক বরিশালে ‘সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহর রক্ষা বাধ দখলের মহোৎসব উজিরপুরে মাদকসহ জেলা ডিবি'র খাচায় ১ মাদক কারবারী আটক রাজাপুরে নিখোজ ভ্যান চালকের লাশ ভাসছিলো নদীতে

বরিশালে প্রথমে করোনা ভ্যাকসিন নেবেন তিন চিকিৎসক

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সারাদেশের মতো বরিশাল বিভাগেও আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। বিভাগটির ৬ জেলার ৪২ উপজেলায় ওইদিন টিকা দেওয়া হবে। বরিশাল নগরীর টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন সিটি করপোরেশন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল টিকা কেন্দ্রে তিনি এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। প্রায় একই সময় নগরীর জেনারেল হাসপাতাল ও জেলা পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে।

অন্যদিকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৪২ উপজেলায় টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। সেখানে উপস্থিত থেকে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নাসরীন জাহান রত্না।

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে মানুষের সংশয় দূর করতে ওই ৪টি হাসপাতালে টিকা প্রথমে গ্রহণ করবেন তিনজন চিকিৎসক এবং একজন পুলিশ সদস্য।

টিকা কার্যক্রমের শুরুর দিন নগরীর জেনারেল হাসপাতাল প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টিকা নেবেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক ডা. পিযুস কান্তি দাস। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে প্রথম টিকা নেবেন মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অসিত ভূষন দাস। বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেন্দ্রে প্রথম টিকা নেবেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন। তবে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে প্রথমে কে টিকা নেবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জেলা পুলিশের অনেক সদস্যই টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে প্রথমে কে টিকা নেবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে প্রথম ধাপে টিকা প্রয়োগের জন্য ৬ জেলা শহরের সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা পর্যায়ে স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভাগের জন্য পাঠানো ৩ লাখ ৪৮ হাজার ডোজ করোনার টিকা এরই মধ্যে জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে প্রথম ধাপে বরিশাল জেলায় ১ লাখ ৬৮ হাজার জন, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার জন, ঝালকাঠিতে ১২ হাজার জন, পিরোজপুরে ৩৬ হাজার জন, ভোলায় ৬০ হাজার জন এবং বরগুনায় ২৪ হাজার ব্যক্তি এই টিকা পাবেন। এ পর্যন্ত বিভাগের ৬ জেলায় ২ লক্ষাধিক মানুষের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। টিকা নিতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ টিকার কার্যকারিতা, মান নিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিভাগে টিকা প্রয়োগের জন্য প্রশিক্ষিত নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে ৫৪০ টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে ২জন উচ্চ প্রশিক্ষিত ভ্যাকসিনেটর এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, বিভাগের ৬ জেলা শহরের সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা পর্যায়ে স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে টিকা প্রয়োগের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে অপেক্ষা ঘর, টিকা দেওয়ার কক্ষ এবং বিশ্রাম শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি টিকা প্রয়োগের জন্য ১ হাজার ৮০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তাদের সহয়তার জন্য ২ হাজার ১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সারাদেশের মতো বরিশালেও একই দিনে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। ওই দিন সকালে প্রায় একই সময় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, জেলা পুলিশ লাইন্স হাসপাতাল ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেয়ার মাধ্যমে বরিশাল বিভাগে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন হবে। টিকা নিয়ে মানুষের সংশয় দূর করতে ওই ৪টি হাসপাতালে টিকা প্রথমে গ্রহণ করবেন তিনজন চিকিৎসক এবং একজন পুলিশ সদস্য। এরপর একে একে নিবন্ধিত ব্যক্তিদের টিকা দেয়া হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে টিকা দেয়া হবে।

ডা. পিযুস কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য টিকা নেব। করোনামুক্ত হলে আমার দ্বারা অন্য কেউ আক্রান্ত হবে না। নিজে সুরক্ষিত হলাম এবং অন্যকেও সুরক্ষিত রাখলাম। আর প্রথমে টিকা নেওয়ার কারণ হলো, সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা দূর করে উদ্বুদ্ধ করতে। চিকিৎসককে টিকা নিতে দেখলে মানুষের ভীতি ও ভুল ধারণা দূর হবে আশা করি।

ডা. অসিত ভূষন দাস সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম দিন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজহাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নেয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। মানবদেহে এই টিকা নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। টিকা প্রয়োগের পর এটিকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মানবদেহে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে দেখা গেছে। টিকা শুধু ওই টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিকেই নয়, তার আশপাশে থাকা অন্যদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়। সবাইকে অনুরোধ করবো অনলাইনে নিবন্ধন করে যথা সময় টিকা নিয়ে নিরাপদ থাকতে ও অন্যকে নিরাপদ রাখতে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, টিকা নিয়ে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অপপ্রচার বন্ধে তিনি বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেন্দ্রে প্রথমে টিকা নেবেন। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজবও আছে।

তিনি বলেন, টিকার সে রকম কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সামান্য কিছু সমস্যা হতে পারে, যেমন একটু ব্যথা হতে পারে, জ্বর হতে পারে, শরীরে র‌্যাশ হতে পারে। এর জন্য আমরা তৈরি আছি। আমরা এগিয়ে এলে সাধারণ মানুষ উৎসাহিত হবে। ধীরে ধীরে মানুষের সংশয় দূর হয়ে যাবে। মানুষও টিকা দিতে আগ্রহী হবে। টিকা নিয়ে অপপ্রচারে জনগণকে কান না দেওয়ার আহ্বান ডা. মনোয়ার হোসেনের।’

সর্বশেষ