৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের ৪ জনকে মারধর

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের চারজনকে বেধড়ক মারধর করেছেন বাস শ্রমিকেরা। এ সময়ে মারধরের শিকার ওই পরিবারের সঙ্গে থাকা ৭ বছরের এক শিশুকে বাসের জানালা থেকে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালের এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন সাংবাদিকদের জানান, যাত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি বাসস্ট্যান্ডে হলেও তাদের ওই বাসের শ্রমিকরা মারধর করেছে স্ট্যান্ডের বাইরের সড়কে। ঘটনাটি ঘটিয়েছে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকেরা।

শিপন বলেন- তাদের কাছে বরিশালবাসী এক ধরনের জিম্মি। এ ঘটনার বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতাদের জানাতে পারব, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে পারব না। ব্যবস্থা নিতে গেলে ঝালকাঠি মালিক সমিতি রূপাতলী থেকে বাস সরিয়ে নিয়ে ঝালকাঠীর কালিজিরায় স্ট্যাড করে। সেই সঙ্গে ঝালকাঠীতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বরিশালের বাস।

মারধরের শিকার চারজন হলেন- মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে শামীম সিকদার (২৭), তার মা হাসনুর বেগম (৫৫), ভাগ্নে বউ কারিমা ও কারিমার সাত বছরের মেয়ে মুনিয়া।

 

শামীম সিকদারের গ্রামের বাড়ি মঠবাড়িয়ায় হলেও বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কালিজিরায় বসবাস করেন।

সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সকালে পরিবার নিয়ে মঠবাড়িয়া যাচ্ছিলেন। বিগত সময়ে বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়ায় ভাড়া ১৫০ টাকা হলেও করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে আদায় করা হয়। আমরা চারজনই ২৪০ টাকা করে টিকিট নিয়ে সিটে বসেছি। নিয়ম হচ্ছে, এক সিট খালি রাখা। কিন্তু ওই বাসটির সুপারভাইজার এক সিট তো ফাকা রাখছেই না বরঞ্চ আরও যাত্রী তুলছিল দাঁড় করিয়ে নেওয়ার জন্য। আমি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ বাসস্ট্যান্ডের ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক মিলে বাসের সিটেই আমাকে মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে শ্রমিকেরা আমার মা, ভাগ্নে বউ কারিমাকে মারধর করে শুধু আমাদের মারধর করছে সেটাই নয়, আমার ভাগ্নের সাত বছরের মেয়ে মুনিয়াকে জানালা দিযে ছুঁড়ে নিচে ফেলে দিয়েছে।

ঘটনাপ্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মাহিম পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪৪৯৯৮) সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে ব্যাপক মারধর করা হয়। যাত্রী মারধরে শুধু ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাই নয় রূপাতলী বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাও অংশ নেয়। ওই যাত্রীকে সপরিবারে মারধরের পর বাসটি স্ট্যান্ড ছেড়ে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

শুধু মাহিম পরিবহন নয়, বরিশালের অভ্যন্তরীণ সব রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। প্রশাসনিক কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরবিহন করছে। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির লাইন বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন শামীম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি এবং মারধরের শিকার যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

অনুরুপ বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ