১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের কর্মসূচির নামে তাণ্ডব

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালে ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও মামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির নামে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। বিক্ষোভ চলাকালে এক মোটর সাইকেল চালক, সিএনজি চালক, সাংবাদিক ও ট্রাফিক সার্জেন্টকে মারধর করেছে তারা। এ সময় একটি সিএনজিও ভাংচুর করা হয়েছে। অন্যদিকে সিএনজি ভাংচুর ও চালককে মারধরের প্রতিবাদে কোতয়ালী মডেল থানা ঘেড়াও করেছে সিএনজি মালিক ও চালক সমিতির নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ১১টার দিকে নগরীর টাউন হলের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে বরিশাল রিক্সা-ভ্যান চালক-শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং ২৩২৪)। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি নগর ভবনে সামনে গেলে সেখানে গিয়ে তাণ্ডব চালায় শ্রমিকরা।

শনিবার সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর টাউন হলের সামনে যত্রতত্র অযৌক্তিকভাবে ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে ট্রাফিক হয়রানি ও মামলা দেয়া বন্ধ করা, মামলার জরিমানা অনধিক ৫০০ টাকা করা, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণ, অবিলম্বে সিটি কর্পোরেশনে ব্যাটারিচালিত রিক্সা উচ্ছেদ বন্ধ ও ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেয়া ও বিআরটিএ স্বীকৃত লাইসেন্স দেয়াসহ ৪ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে রিক্সা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ।

সমাবেশে সংগ্রাম পরিষদের বরিশাল জেলার সভাপতি দুলাল মল্লিক সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়কারী ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সংগ্রাম পরিষদের ১৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শহিদুল শেখ, ৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি মনির সর্দার প্রমুখ।

পরে মিছিলটি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের সামনে গেলে সেখানে মেহেদি মুন্না নামের এক মোটরসাইকেল চালককে বেধরক মারধর শুরু করে বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রমিকরা। এ সময় তাকে রক্ষার্থে ছুটে আসেন মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম। তখন তার মাথায়ও লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে বরিশাল ক্রাইম নিউজের রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম শান্তর ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা একটি সিএনজি ভাংচুর করা হয় এবং সিএনজি চালক শুভকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে বিক্ষুদ্ধরা পালিয়ে যায়। এ সময় মোটরসাইকেল চালক মেহেদি মুন্নাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

অপরদিকে সিএনজি ভাংচুরের খবর পেয়ে ছুটে আসে সিএনজি মালিক ও চালক সমিতির নেতৃবৃন্দ। তারা এসে সিএনজি ভাংচুর ও চালককে মারধরের প্রতিবাদে প্রথমে টাউন হলে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা মিছিল নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানা ঘেড়াও করে ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলার দাবি জানান। পরে ওসির আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধ করে দেন তারা।

ভাংচুর করা সিএনজির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন- আমি সিএনজি চালকের ফোন পেয়ে এসে দেখি আমার সিএনজি ভাংচুর করা হয়েছে এবং চালককে মারধর করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশে সার্জেন্ট শহীদুল ইসলাম বলেন- মিছিল চলাকালে এক মোটর সাইকেল চালককে মিছিলের মধ্যে ঢুকে যায়। তখন তাকে মারধর শুরু করলে আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে যাই। এ সময় কি কারণে আমাকে মারা হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না।

ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী বলেন- আমাদের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন মোড় থেকে মিছিল নিয়ে যাবার সময় একটি পালসার মোটরসাইকেল প্রচন্ড গতিতে মিছিলের মধ্যে শ্রমিকদের গায়ে উঠে যায় ও কিছু অজ্ঞাতপরিচয় লোক মিছিলে ঢুকে শ্রমিকদের হামলা করে ও আশেপাশে গাড়িতেও আঘাত করে। পরে শ্রমিকরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ ফজলুল করিম করিম বলেন- ট্রাফিক সিগনাল ভেঙে মিছিলের মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢোকায় এক চলককে থানায় নেয়া হয়েছে। আর মিছিলে অংশ নেয়া শ্রমিকরা ভাংচুর করলে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন- ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করে ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের মিছিলে ঢুকে পরায় এক মোটরসাইকেল চালককে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে মিছিলে অংশগ্রহণকারী সিএনজি ভাংচুর করেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ