নিজস্ব প্রতিবেদক :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে এমবিবিএস চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ১২টি স্বাস্থ্য ও কল্যাণ কেন্দ্রে ৩৯তম বিসিএসের ১২ জন এমবিবিএস চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে নিয়োগ পাওয়ার প্রায় এক বছর হয়ে আসলেও কর্মস্থলে একদিনও যাননি বাকেরগঞ্জে যোগদান করা ১২ চিকিৎসক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে বাকেরগঞ্জ হাসপাতালে যোগদান করলেও নিজ কর্মস্থলে নেই তাদের উপস্থিতি। তারপরও নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা। আর এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূল পর্যায়ের লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ওইসব চিকিৎসকরা জেলা ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন ব্যক্তিগত চেম্বারে বসে রোগী দেখছেন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও কল্যাণ কেন্দ্রে যোগদান করা চিকিৎসকরা হচ্ছেন- চরামদ্দি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. নাসরিন আক্তার, ফরিদপুর-দুর্গাপাশা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. জেসরিন আক্তার, লক্ষ্মীপাশা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ ফজলে রাব্বি, খয়রাবাদ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, চামটা মেডিকেল অফিসার ডা. জান্নাতুল নাইম মৌরী, চরাদী কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. নুসরাত জাহান মিশু, ভরপাশা কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. ঈষিতা মজুমদার, দুর্গাপাশা কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. মনিরুজ্জামান খান, রঙ্গশ্রী কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. কাজী মুহাম্মাদ সাইফ হাসান, নলুয়া কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. দুরদানা সাদাব, দুধাল কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. ফারহানা অফরোজ ও দাড়িয়াল কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. সাদিয়া আফরোজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগপ্রাপ্ত ওইসব চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. মনিরুজ্জামান খান ও ডা. সৈয়দ ফজলে রাব্বি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি করেন। বাকিদের মাঝে-মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা মিললেও নিজ কর্মস্থলে একদিনের জন্য যাননি। এছাড়া ভরপাশ কেন্দ্রের ডা. ঈষিতা মজুমদারকে নিয়োগের পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও দেখা যায়নি। তবে দুর্গাপাশা কেন্দ্রটি নদীতে ভেঙে যাওয়ায় ওই কেন্দ্রের ডা. মনিরুজ্জামান খান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি করছেন।
এসব বিষয়ে উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বারবার চাপ প্রয়োগ করেও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দফতরের অবহেলার কারণে প্রধানমন্ত্রীর মহৎ উদ্যোগ কোনো কাজে আসছে না। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূল পর্যায়ের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ।
অভিযোগের বিষয় জানতে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের সত্যতা প্রকাশ করে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট থাকায় তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকতে বলা হয়েছে। সংকট কেটে গেলে তাদের নিজ কর্মস্থলে পাঠানো হবে।