নিজস্ব প্রতিবেদক ::: গত ১১ জুন বরিশাল জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এ ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় জেলার বানারীপাড়া উপজেলায় পুনর্বাসিত না করে আটটি পরিবারকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে তাদের ভূমিহীন ও গৃহহীন করে পথে নামিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাহসিন তাসমিম রহমানের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (২ জুলাাই) অভিযান চালানো হয়। সকাল ৮টায় শুরু করে বৃষ্টির মধ্যে প্রায় দিনভর এ উচ্ছেদ অভিযান চলে।
অভিযানে তিনটি টিনশেড ভবনসহ আটটি বসতঘর ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে ঢোকার একমাত্র রাস্তাটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। সময় চেয়ে কাকুতি-মিনতি করেও উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে পারেননি ভুক্তভোগীরা।
ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন– আ. ওয়াহেদ হাওলাদার, আব্দুল মালেক বেপারি, সালেক বেপারি, সুজন বেপারি, সাইদুল হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হাওলাদার, বাদশা হাওলাদার ও তৈয়ব হাওলাদার। তারা সবাই দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৬৯ সাল থেকে প্রায় ৫৫ বছর ধরে উপজেলা পরিষদের পেছনে পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২৮ শতক খাস সম্পত্তি লিজ নিয়ে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কয়েক বছর ধরে তাদের লিজ নবায়ন বন্ধ করে দেওয়া হয়। লিজ নবায়নের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসসহ ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দৌড়ঝাপ করেও তারা ব্যর্থ হন। গত মাসে তাদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেওয়ায় তারা বরিশাল আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। এ ছাড়া হাইকোর্টেও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাহসিন তাসমিম রহমান বলেন, উচ্ছেদ মিসকেস ০৩ বিপি ২৩/২৪ এর চূড়ান্ত আদেশ ও অফিস আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয়। তা ছাড়া আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা কিংবা স্থিতাবস্থা বজায়ের আদেশ ছিল না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্তরা হালদার বলেন, অবৈধভাবে দখল করে রাখা ওই খাস সম্পত্তিতে এসিল্যান্ডের বাসভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি পরিবারগুলোকে জমিসহ ঘর পাওয়ার আবেদন করতে বলেন।