২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বাকেরগঞ্জে গ্রামাঞ্চলে চোর-ডাকাত আতঙ্ক ! গায়ে মাখছেনা পুলিশ বরিশালে পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের ঈদ পুনর্মিলনী এবার তালতলীর আরেক ইউপি চেয়ারম্যানের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মনপুরায় ব্যবসায়ীর দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি গলাচিপায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক শিশুর মৃত্যু বরগুনায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার গাঁজাসহ কারবারী আটক বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনে আমার কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গাবালীতে মুগডাল তোলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, দুই নারীসহ আহত ৭ ববি শিক্ষিকার চুরি হওয়া ল্যাপটপ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩ দেশীয় তহবিলের অর্থে নির্মাণ হচ্ছে মীরগঞ্জ সেতু

বাবুগঞ্জে ইউএনও’র সেচ্ছাচারিতায় জনপ্রতিনিধিদের অসন্তোষ !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বাবুগঞ্জ(বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সবংর্ধনা অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের যথা স্থানে বসার ব্যবস্থা না করায়, বক্তব্য দেয়ার সুযোগ না দেয়ায় ও এক অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবর্তে তাদের সন্তান পুরস্কার নিতে আসলে তার হাতে পুরস্কার দিতে অনিহা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানরা। একাধিক জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমা উপজেলা পরিষদের সাথে কোন বিষয়ে সমন্বয় না করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।
তথ্য সূত্রে যানা গেছে,
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্ব বাবুগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে যোগদান করেন নুসরাত ফাতিমা । যোগদানের পরই মা ইলিশ শিকার বন্ধে চলমান অভিযানে ব্যবহৃত একটি ট্রলার বেআইনি ভাবে পুড়িয়ে দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এছাড়াও অতি সম্প্রতি উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের রেকর্ডীয় সম্পত্তিতে জনস্বার্থের দোহাই দিয়ে নালা নির্মান করে।
এতে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বাধা দিলে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে শারিরীক লাঞ্চিত করেন এবং তার সন্তানদেরকে বেআইনি ভাবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাদন্ড প্রদান করেন। যাহা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম।
এ ছাড়াও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা ক্যালকুলেটর নিয়ে আসলে ইউএনও অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর ক্যালকুলেটর ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে উপজেলার ৩০ টির অধিক ইটভাটা, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টান ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক কয়েক লক্ষাধীক টাকা উত্তোলন করে দায়সারাভাবে সরকারি প্রোগ্রাম পালন করেন।
এমনকি তিনি ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীনদের জন্য উপহার ঘর নির্মান কাজের দায়িত্ব থাকা এক কমচারী ও ইটভাটা ম্যানেজারকে কোমড়ে রশি দিয়ে কয়েক ঘন্টা বেধে রাখেন। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিদের অবমূল্যায়ন করে আসছেন এবং আসন বিন্যাস করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মান কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলার একটি দপ্তরের জনৈক কর্মচারী ও এক ইটভাটার ম্যানেজারকে কয়েকঘন্টা কোমরে রশি দিয়ে বেধে রাখেন।
সর্বশেষ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বসার আসন ২য় সারিতে করায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে অবহিত করেন। এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলাল জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে সামনের সারিতে বসার জন্য জায়গা নির্ধারন করে ইউএনও কে জানান। কিন্তু পরবর্তীতে ইউএনও কেন চেয়ারম্যানদের বসার জন্য কেন পিছনের সারি বরাদ্দ করেন তা জানা নেই।
এদিকে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব ও ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল আহমেদ আজাদ জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে বঙ্গবন্ধু
ম্যুরাল সংস্কারের নামে বরাদ্দের বিল উত্থাপন করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের নামে বরাদ্দ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা তার সরকারি বাসভবনের শৌচাগার, বাসভবনের আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র ক্রয় করেন।
এসময় গত ফেব্রুয়ারী মাসে মিটিংয়ে উক্ত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল সংস্কারের নামে বরাদ্দ ও ইউএনও এর বাসার শৌচাগার মেরামতের বিল আলাদাভাবে রেজুলেশনে আনতে বলা হয়। কিন্তু সেটি না করায় গেল ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় রেজুলেশন বইতে উপজেলা পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও দুই জন ইউপি চেয়ারম্যান ওই রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। ফলে কোরাম সংকটে রেজুলেশন পাস হয়নি।
বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের নামে বরাদ্দ নিয়ে ইউএনও এর বাসার শৌচাগার সংস্কার, আসবাবপত্র ক্রয় ও তৈজসপত্র ক্রয় করায় বিতর্কে পরেন ইউএনও। যা নিয়েও উপজেলা পরিষদের সাথে ইউএনও’ র সাথে দ্বন্দ্ব চরমে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব ও ইকবাল আহমেদ আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের আয়োজিত প্রতিটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোনো আলোচনা বা সমন্বয় ছাড়াই নিজেই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসাবে এটি আমাদের প্রত্যাশা নয়। সমন্বয় হীনতার বিষয়ে তাকে একাধিক বার ধারণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কর্নপাত করেননি। এভাবে চললে জনপ্রতিনিধিদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের একটি বিরোধময় সম্পর্ক সৃষ্টি হবে। এটি অচিরেই নিরসন দরকার।
অভিযোগের বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুসরাত ফাতিমা বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর সাথে সকল বিষয় আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সর্বশেষ