২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাবুগঞ্জে মেম্বার প্রার্থী-তরুণীর আপত্তিকর ছবি দিয়ে ব্যানার ও পোস্টার!

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর সঙ্গে তরুণীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দিয়ে ব্যানার ও পোস্টার ছাপিয়ে বিভিন্ন স্থানে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ছবি দিয়ে লিফলেট তৈরি করে এলাকার বিভিন্ন দোকান ও বাড়িতে বিতরণ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। ওই ইউপি সদস্য প্রার্থীর নারীঘটিত কর্মকাণ্ডে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কেউ কেউ ইউপি সদস্য প্রার্থীর বিচার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সোহেল হাওলাদার (২৫)। তিনি ৮নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভুতেরদিয়া গ্রামের মো. খালেক হাওলাদারের ছেলে এবং জাতীয় পার্টির (জাপা) অঙ্গ সংগঠন জাতীয় যুব সংহতির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।

কেদারপুর ইউনিয়নের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শনিবার সকালে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে বিশাল একটি ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়। ব্যানারে ইউপি সদস্য প্রার্থী সোহেল হাওলাদার ও এক তরুণীর ছবি ছাপা ছিল। এ ছাড়া বিভিন্নস্থানে পোস্টার সাঁটানো ছিল। এতে সোহেলের সঙ্গে বেশ কয়েকজন তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছাপা ছিল।

দক্ষিণ ভুতেরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. রব প্যাদা বলেন, ‘সোহেল হাওলাদারের স্বভাব-চরিত্র ভালো নয় বলে শুনেছিলাম। মাস খানেক আগে ফেসবুকে মদের বোতল নিয়ে ও কয়েকটি মেয়ের সঙ্গে তার ছবি দেখেছি। তবে তার চরিত্র এতটা খারাপ তা বুঝতে পারিনি। তাকে নিয়ে গ্রামে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় তার বিচার হওয়া উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোহেলের বাবা খালেক হাওলাদারেরও চরিত্র ভালো নয়। কয়েক বছর আগে গ্রামের এক দিনমজুরের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। এ ঘটনায় তখন থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।’

কেদারপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ও দক্ষিণ ভুতেরদিয়া গ্রামের বসিন্দা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সোহেল ও তার বাবা খালেকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নারীঘটিত বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। খালেক হাওলাদারের নারীঘটিত বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার হয়েছে। অন্তত তিনটি বিচারে আমি উপস্থিত ছিলাম। সে সময় তাকে শাস্তি ও জরিমানা করা হয়। তার ছেলে সোহেল বাবার পথেই হাঁটছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় বছর আগে সোহেল পাশের গ্রামে বিয়ে করেছিল। বিয়ের পরও একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে। তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিয়ের ছয় মাসের মাথায় স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। তবে ছবি দিয়ে এভাবে ব্যানার ও পোস্টার করা ঠিক হয়নি। এসব দেখে গ্রামের উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

সোহেল হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ একজন জানান, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সোহেল নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন। পরে ওই নারীদের আপত্তিকর ছবি তার নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। পরে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের অনৈতিক সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করতেন তিনি। মাসখানেক আগে সোহেলের পকেট থেকে তার মোবাইল ফোন পড়ে যায়। পরে গ্রামের কেউ হয়তো ওই ফোনটি কুড়িয়ে পান। তাতে মেমোরি কার্ডে সংরক্ষণ করে রাখা তরুণীদের সঙ্গে সোহেলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি গ্রামের মানুষের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়া হয়।’

তবে সোহেল হাওলাদার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদে নির্বাচনে লড়ছি। ওই পদে আরও তিনজন লড়ছেন। এলাকার মানুষের আমার প্রতি সমর্থন দেখে তাদের মধ্যে কেউ হয়তো এ কাজ করেছেন। আর যাদের ছবি দিয়ে ব্যানার ও পোস্টার ছাপানো হয়েছে ওই সব নারীরা আমার স্বজন। সম্পর্কে কেউ ভাবি, চাচাতো-মামাতো-খালাতো বোন।’

ছবি কীভাবে ফাঁস হলো জানতে চাইলে সোহেল হাওলাদার বলেন, ‘মাসখানেক আগে আমার ফোনটি ছিনতাই হয়। ফোনের মধ্যে বেশকিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। ওই সব ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে।’

সর্বশেষ