১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিআরডিবির আর্থিক সহায়তায় শুটকি উৎপানে এগিয়ে পূর্ব সোনাতলাবাসী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে শূটকি উৎপাদনে এগিয়ে পূর্ব সোনাতলা গ্রামের উদ্যক্তারা। কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্তরা কলাপাড়া বিআরডিবি‘র আর্থিক সহায়তা পেয়ে তাদের পেশাগত অভিজ্ঞতা ও আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর নিজ গ্রামেই শুরু করেছেন শুটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সোনাতলা গ্রামের নদীর পার জুড়ে দেখা যায় বিভিন্ন শুটকি মাছের আনাগোনা। শুটকি মোকাম করার জন্য কেহ বস্তা ভর্তি করছেন। আবার কেহ রৌদ্রে মাছ শুকাতে নাড়াচারা করতে ব্যস্ত। গত প্রায় দুই যুগ ধরে মো. জসিম চৌকিদার, মো. সিদ্দিক মিস্ত্রী, মো. শাহজাহান খলিফাসহ ওই গ্রামের প্রায় অর্ধশত জেলে বিগত বছর কুয়াকাটা গঙ্গামতি কাউয়ারচর এলাকায় শুটকি উৎপাদন করে আসছিলেন। কিন্তু কোভিড-১৯ এর প্রভাবে মাছ শিকার করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতি ও হঠাৎ তেলের দাম বৃদ্ধিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উর্ধ্বগতি মোকাবেলায় সমুদ্র পাড়ে না গিয়ে এখন থেকে বাড়িতেই শুটকি উৎপাদন করবেন বলে জানান শুটকি পল্লীর ওই জেলেরা। পূর্ব সোনাতলা গ্রামের এসব জেলেরা বিভিন্ন সময়ে মহাজন ও প্রতিবেশির কাছ থেকে নেয়া দাদন (অগ্রীম ঠাকা) পরিশোধ করার তাগিদ যেন প্রতি মুহূর্তে তাড়া করে বেড়ায়। বেকার হয়ে পড়া এই দুঃসময়ে কি করে ঋণ পরিশোধ করবেন ভেবে কূলহাড়া এসব জেলেদের বুকভরা আর্তনাদ যেন কেহই শুনতে পায় না। জানা যায়, অধিক ঋণগ্রস্থ ও কর্মচারী বেতন দিতে না পেরে নিরুদ্দেশ হন একই গ্রামের মো. হানিফ খলিফা। মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ট্রলারটি নদীর তীরে পড়ে থেকে ধ্বংসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে। হানিফ খলিফার পারিবারিকভাবেও জানা যায়নি তার খোঁজ। দিশেহারা ওই ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের এমন পরিস্থিতিতে কলাপাড়া উপজেলা বিআরডিবি‘র আর্থিক সয়ায়তায় তাদের প্রাণচাঞ্চলতা ফিরিয়ে পান ওই হতাশাগ্রস্থ শুটকি জেলেরা। প্রণোদনার ঋণ নিজেদের টাকার সাথে যোগ করে সাগরে স্বাচ্ছন্দে একযোগে মাছ শিকার করা ছুরি, সোনাপাতা, গাবের আটি ও ফাহা মাছ বাড়ির সামনে নদীর কূলে শুটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেন। উৎপাদিত শুটকির বড় মোকাম সৈয়দপুর রংপুর ও চট্রগ্রাম। শুরুতে ওই গ্রামে এবছর পাঁচ টনের মত উৎপাদন লক্ষমাত্রা থাকলেও পরবর্তীতে দেশের করোনা পরিস্থিতি ও মোকাম স্বাভাবিক থাকলে কয়েকগুন শুটকি উৎপাদন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন জেলেরা। ছুরি মাছ ৮ হাজার, গাবের আটি ও সোনাপাতা ৫ হাজার ও ফাহা মাছের মন ৮ হাজার টাকা করে মোকাম করেন বলে জানান শুটকি পল্লীর ওই জেলেরা। জেলে মো. আল আমিন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে আমগো অনেক ক্ষতি অইছে, টাহা পয়সার অনেক অভাবে আছি, দূরে থাকলে খাওন খরচ বেশি পড়ে। বর্তমানে বাজারের জিনিষপত্রের দাম অনেক। হ্যার জন্য সাগর দিয়া মাছ ধইর‌্যা বাড়ির সামনে মাছ শুকাাইয়া মোকাম করি। জেলে মো. জসিম চৌকিদার বলেন, আমাগো টাকা অইলে শুটকি উৎপাদন করা যায় অনেক বেশি। দাদন আনছি হ্যা পরিশোধ করতে অইবে। এতে ম্যালা টাকা লাগে। ঋন পাইয়া আমাগো অনেক উপকার অইছে। আস্তে আস্তে দেনা শোধ করা যাইব।
উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া জানান, আমরা জানতে পারি নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সোনাতলা গ্রামের অনেকেই শুটকি উৎপাদনের সাথে জড়িত। তাদের করুন অবস্থা বুঝতে পেরে এলাকায় গিয়ে খোজঁ খবর নিয়ে কয়েকজনকে সহজ শর্তে দেড় লক্ষ টাকা করে প্রনোদনা প্রদান করি। বিআরডিবির টাকা পেয়ে তারা তাদের শুটকি উৎপাদন কাজ শুরু করেন। তারা এখন পর্যন্ত তাদের লেনদেন ভালোভাবে চালাচ্ছে।
##

সর্বশেষ