ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে মহাবিপন্ন হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির একটি শকুন উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে বনবিভাগ। বুধবার সকালে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা চর জহিরউদ্দিনে শকুনটি অবমুক্ত করা হয়।
ভোলা বনবিভাগের বণ্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তিনদিন আগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের একটি বাগানে গাছের ডাল ভেঙে শকুনটি মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় ব্রিকফিল্ড মালিক জসিম হাওলাদার শকুনটি তার দায়িত্বে রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার-দাবার দিয়ে সুস্থ করেন।
এরপর বিষয়টি বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বন বিভাগকে জানানো হয়। বনবিভাগ মঙ্গলবার শকুনটি সেখান থেকে উদ্ধার করে। পরে চর জহিরউদ্দিনের গহীন অরণ্যে অবমুক্ত করা হয়।
ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির কো-অর্ডিনেটর ও বন্যপ্রাণী গবেষক সামিউল মেহেসানিন ইমেইলের মাধ্যমে শকুটির ছবি দেখে এটিকে হিমালয়ী শকুন (Himalayan Griffon) বা হিমালয়ান গৃধিনী বলে চিহ্নিত করেন। হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির এই শকুনগুলো বাংলাদেশে সচারাচর দেখা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তরে প্রচণ্ড শীতের কারণে হিমালয় থেকে শকুনটি খাবারের সন্ধানে ভোলায় এসেছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’ (Critically Endangered)। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সঙ্কট এবং বাসস্থান সঙ্কটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি দেশের মানুষ এনথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু হতে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। বনবিভাগসহ বিভিন্ন সংগঠন শকুন রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাখিটির প্রতি প্রত্যেক মানুষের সদয় হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।”