সেলিম শিকদার, সিরাজগঞ্জঃ-
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষণের কারণে উজানে বিভিন্ন নদ-নদীর পাণি বৃদ্ধি সহ সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী ও শাখানদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলের নিন্মভূমি প্লাবিত হয়েছে।
এতেকরে শত শত একর ফসলি জমি পাণিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত গতিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকার বানভাসি মানুষেরা মানবেতর জীবন পার করছে বলে জানাগেছে ।
গত (১৫ জুলাই) বুধবার সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধিপেয়ে ১৪ দশমিক ০৩ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৩৬ ঘন্টায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন,বিগত ৩২ বছরের মধ্যে এতো দ্রুতগতিতে যমুনায় পানি বাড়তে দেখা যায়নি।
এদিকে, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের ফসলি জমিগুলো তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। যমুনা নদী অধ্যুষিত জেলার প্রায় ৭২ মাইল আয়তন জুরে নদীরপাণি বৃদ্ধিপেয়ে পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৩০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম মণ্ডল বলেন, জুন মাসের শুরু থেকেই যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের সব ফসলি জমি তলিয়ে বিভিন্ন ফসলাদী নস্ট হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) হাবিবুল হক জানান, চরাঞ্চলের প্রায় ৯০ একর জমির পাট ও ৫০ একর জমির তিল সম্পূর্ণরূপে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও কদিনের টানা বৃষ্টির ফলে ৫৮০ একর জমির সবজির সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। পানি বাড়তে থাকায় চরাঞ্চলে আবাদকৃত বাদাম ও ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে সিরাজগঞ্জের বুকচিরে বয়েচলা প্রমত্ত যমুনা নদীর তীরবর্তী ঐতিহ্যবাহী নদীবন্দর মতিসাহেবের ঘাট সংলগ্ন পুরাতন হেলি পোর্ট এলাকা,ধানবান্ধী পূর্বপাড়া, পুঠিয়াবাড়ি,আনারস ঘাট,রৌহাবাড়ি, মোল্লাবাড়ি, ৩ নং-চায়নাবাধ,কাটা ওয়াবদা,চর-মালশাপাড়া,বিয়ারা এলাকাসহ বিস্তির্ন্য এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
এসকল স্থানে বসবাস কারি দরিদ্র, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের অসহায় মানুষেরা পানিবন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন পার করছে।
এসকল স্থানের বানভাসি অসহায় অনেক পরিবারের লোকেদেরকে স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক কাউন্সিলর হাজী আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে ত্রান বা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার আশায় ভির জোমায় বলেও জানাযায়।
সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর,জেলা মৎস্য জীবীলীগের কার্য্যকারি সভাপতি ও মতিসাহেবের ঘাট পোর্ট বন্দর শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক
মোঃ সফর আলী,মিন্টু শেখ, আব্দুল মজিদ,শাহাদত হোসেন,আবু বকর প্রধান সহ অন্যান্যরা জানান, অত্রাঞ্চলের প্রায় একহাজার পরিবার বন্যাকবলিত ও পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে।
এসকল পানিবন্ধি মানুষদের যোগাযোগ ব্যাবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবনপার করছে, অনেকে ডিঙি নৌকা বা বিকল্প ভেলা বানিয়ে চলাচল করছে।
এসকল বানভাসি ও পানিবন্ধি অসহায় মানুষের মাঝে জরুরী ভাবে ত্রান সামগ্রী ও পানিবাহীত রোগের ঔষধ সহ যোগাযোগ ব্যাবস্থা চালুর জোরদাবী জানিয়েছেন।