১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মঠবাড়িয়ায় মুজিব কিল্লা নির্মাণে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুর প্রতিনিধি ::: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুজিব কিল্লা নির্মাণে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের নুরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাছে এ মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজটি পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রুপালি কনস্ট্রাকশন ও সারিকার ট্রেডার্স। প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের জুনে। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের জুনে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৬০ ফুট গভীর পর্যন্ত পাইল বসানোর কথা থাকলেও বসানো হচ্ছে ১৩ ফুট। মোট ৭৪টি পাইল বসানোর কথা। প্রতিটির গভীরতা থাকবে ৬০ ফুট। এরই মধ্যে ২২টি পাইল বসানো হয়েছে। এ ২২টিতে ৫২ ফুট করে রড বসানো হয়েছে। ২২টির পরের যেগুলো পাইল বসানো হয়েছে, স্থানীয়দের নজরে এলে তারা দেখেন ১৩ ফুট রড মাটিতে ঢুকানো হচ্ছে। তা ছাড়া অপরিষ্কার পাথর দিয়ে ঢালাই কাজ চলছে। এমনকি প্রকল্পের ব্যয়সহ বিস্তারিত উল্লেখ করে সাইনবোর্ড লাগানোর নিয়ম থাকলেও প্রকল্প এলাকায় এর কোনো চিহ্নই নেই। বেশিরভাগ সময় তারা কাজ করেছেন রাতে। অনিয়ম করার জন্য জনগণের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতে কাজ করছেন বলে অভিযোগ।

নুরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, শনিবার এলাকাবাসীর চোখে ধরা পড়ে ৬০ ফুট গভীর পর্যন্ত পাইল দেওয়ার কথা থাকলেও ১৩ ফুট পাইল দিচ্ছে তারা। আমি বরিশালে ছিলাম। খবর পেয়েই তাড়াতাড়ি চলে আসি। এসে দেখি ঘটনা সত্যি। এলাকাবাসী এবং প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি কমিটি করার কথা থাকলেও ঠিকাদার সেটি করেননি।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন হাওলাদার বলেন, ফজরের নামাজ শেষে বাসায় যাওয়ার পথে দেখি তারা পাইলের কাজ করছেন। পাইলে অসংগতি দেখে তাদের জিজ্ঞেস করি আপনারা ৬০ ফুট পর্যন্ত গভীরে রড ঢোকাবেন কি না। তারা বলেন, এটি পরে করা হবে। আমার সন্দেহ হলে ভাতিজাকে নিয়ে এসে রড উঠিয়ে দেখি ১৩ ফুট করে মাটির নিচে ঢুকিয়েছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুজিব কিল্লা প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহিন।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরেছি আমরা আজকেই, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব। ৬০ ফিট গভীর পর্যন্ত পাইল দেওয়ার কথা কাগজ-কলমে রয়েছে। কম দেওয়ার সুযোগ নেই।

ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে রক্ষা করতে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় মুজিব কিল্লা নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ১৯৩টি মুজিব কিল্লা। এর মধ্যে ৫৪টি বিদ্যমান মুজিব কিল্লা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার হবে, ১৩৯টি নির্মাণ হবে নতুন করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা থেকে মানুষের জানমাল রক্ষায় মাটির উঁচু ঢিবি তৈরি করা হয়। সে সময় এগুলো মুজিব কিল্লা নামে পরিচিতি পায়। পরবর্তী সময়ে এসব মুজিব কিল্লা আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ