১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মনপুরায় লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জ্যো’র প্রভাবে মেঘনার জোয়ারে নিম্মাঞ্চল প্লাবিত

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সোহাগ মাহামুদ সৈকত , মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি ॥
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ, টানা বর্ষণ ও পূর্নিমার জ্যোর প্রভাবে মেঘনার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভোলার মনপুরায় নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে মেঘনার পানির উচ্চতা বেড়ে উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধের ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে উপজেলার বেড়িবাঁধগুলোর বাহিরের বিভিন্ন অঞ্চল, চরাঞ্চল ও নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি জমে পানিবন্ধি থাকায় আতংকিত ও অসহায় হয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা।

এদিকে মেঘনার পানির চাপে উপজেলা শহর রক্ষা বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে এসব গর্ত হওয়া অংশে ফাটল ধরে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই দিনের ভারি বর্ষণ ও লঘুচাপের প্রভাবে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার হাজীর হাট ইউনিয়নের দাসের হাট এলাকা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। টানা জলাবদ্ধতার কারনে পুরোপুরি পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে এই এলাকার মানুষ। বেশিরভাগ বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করায় রান্নার চুলা পানিতে ডুবে থাকায় রান্না না করতে পেরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে দাসের হাটের বাসিন্দারা। এছাড়াও হাজীর হাট ইউনিয়নের চর সামসুদ্দিন, সোনার চর, চর যতিন ও চর জ্ঞান গ্রামের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্ধি হয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা।

এছাড়াও উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার সংলগ্ন ঢাকার লঞ্চ ঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধ কাটা থাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে ঢাকাগামী যাত্রীরা অনায়াসে লঞ্চে না উঠতে পারায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এছাড়াও উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাস্টার হাট, লতাখালী, জনতাবাজার এলাকার নিম্মাঞ্চল ও বেড়ীবাঁধের বাহিরের এলাকা জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত পর্যটন সম্ভাবনাময় মনপুরার সবচেয়ে আকর্ষনীয় পর্যটন স্পট “দখিনা হাওয়া সী বীচ” ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সী বীচের অবকাঠামো ও বেড়ীবাঁধের বিভিন্ন অংশ।

এদিকে লঘুচাপ, টানা বর্ষণ ও পূণিমার জ্যোর প্রভাবে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলির চর, ঢাল চর, কাজীর চর, বদনার চর, চর পাতালিয়া, চর পিওল, চর নিজাম ও চর সামসুদ্দিনে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বান্দিারা।

এব্যাপারে উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমানত উল্লাহ আলমগীর বলেন, মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিচ্ছিন্ন কলাতলির চর, ঢাল চর, কাজীর চর, বদনার চরের বেশিরভাগ ঘর বাড়ি ডুবে গেছে। বসতভিটা ডুবে যাওয়ায় চুলায় রান্না করতে না পেরে অর্ধাহারে অনাহরে আছে এসব চরের বাসিন্দারা।

উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহামুদ জানান, মেঘনার পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অতিরিক্ত পানির চাপে বেড়িবাঁধগুলোর ক্ষতিগ্রস্থ অংশে দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু হবে।
#

সর্বশেষ