২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
উপজেলা নির্বাচন : ঝালকাঠি সদরে আরিফুর, নলছিটি সালাহউদ্দিন নির্বাচিত নেছারাবাদ উপজেলায় আব্দুল হক, কাউখালিতে আবু সাঈদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত মুলাদী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন খসরু নির্বাচিত ভোটকেন্দ্র ফাঁকা: লুডু খেলায় মশগুল আনসার সদস্যরা জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ২০২৪- হামদ ও নাতে সারা দেশে ২য় হয়েছেন চরফ্যাশনের নায়েলা নাফিসা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাইসির মৃত্যুতে বিশ্ব একজন দায়িত্বশীল নেতাকে হারিয়েছে: বিএমএল জিলহজ্জ মাসের ফজিলত ও ইবাদত হিজলা ও মুলাদীতে ভোটগ্রহণ চলছে ! কেন্দ্রগুলো ফাঁকা ফাঁকা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল !

মাটির গান ক্রমশ পদদলিত হচ্ছে, বাউলদের কষ্টে আমার হৃদয়ে বিস্ফোরণ চলছে: শোয়েব চৌধুরী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

এ আল মামুন, বিনোদন প্রতিবেদক: কিছুদিন আগে দুর্বৃত্তরা বাউল রনেশ ঠাকুরের ভিটেবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। একজন বাউলের প্রতি কারা এমন বর্বরতা দেখালো সেটা দেখার চাইতেও জরূরী হচ্ছে কেনো এভাবে বারবার বাউল সম্প্রদায় কিছু নষ্ট মানুষের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন, সেটা খুঁজে দেখা। বাংলাদেশে এখন লোকগান, তথা মাটির গান ক্রমাগত পদদলিত হচ্ছে। কিছু ইউটিউব চ্যানেল এবং টেলিভিশন চ্যানেলে ঐতিহ্যবাহী এই মাটির গান খুবই বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। অর্ধ উলংগ নর্তকীদের নাচানো হচ্ছে মাটির গানের সাথে। এসব দেখে হৃদয়ে বিস্ফোরণ চলছে এ সময়ের সেরা গীতিকার ও সুরকার শোয়েব চৌধুরীর মনে। প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে তিনি বললেন, লোকগান আমাদের অহংকারের স্থান, জাতীয় গর্ব। এই গানকে অপমানিত করা হলে আমাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজ অব্দি লোক সংগীতকে প্রমোট করার মতো রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান হলো না। একটা কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় হলো না। এই কলঙ্কের দায়ভার কে নেবে?

শোয়েব চৌধুরী বলেন, কেবলমাত্র লোক সঙ্গীতকে সঠিকভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে একটা আলাদা টেলিভিশন চ্যানেলের প্রয়োজন আছে। আর্থিক সমস্যাগ্রস্থ বাউল সম্প্রদায় এবং লোকসঙ্গীত শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো সরকারী প্রতিষ্ঠান এক্ষুনি দরকার।

ভীষণ প্রচার বিমুখ গীতিকার ও সুরকার শোয়েব চৌধুরী গান লিখছেন, সুর করছন কয়েক যুগ ধরে। দেশের অনেক খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী ওনার গান গেয়েছেন। তাদেরই একজন ফকির শাহাবুদ্দিন। এই মুহূর্তে লোক সঙ্গীতের অন্যতম সেরা নাম। শোয়েব চৌধুরীর কিছু অসাধারণ গান তিনি গেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘এই এক জীবনে শতশত লোক গান গেয়েছি। বিশ্ব দরবারে বাংলা লোক সঙ্গীতকে তুলে ধরছি। কিন্তু শোয়েব চৌধুরীর গানগুলো আমায় ভীষণভাবে আবেগী করে তোলে। তাঁর গানের কথা ও সুরের ভেতর এমন এক শক্তিশালী যাদু আছে, যা শ্রোতাদের মোহাচ্ছন্নই শুধু করে না, বরং তাদেরকে ডুবিয়ে দেয় গভীর আধ্যাত্মিকতার এক জগতে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আদর করে শোয়েব চৌধুরীর নাম দিয়েছি সাধক শোয়েব। এর কারণও আছে। তাঁর গানগুলোর কথা ও সুর শুনলেই বোঝা যায়, কতোটা গভীর আধ্যাত্মিকতার স্পষ্ট উপস্থিতি আছে ওই গানে। স্রষ্টা ও সৃষ্টির রহস্যে ফানাফিল্লাহ না হলে কারো পক্ষেই এধরনের গান রচনা করা অসম্ভব।’

ফকির শাহাবুদ্দিন বলেন, গভীর আধ্যাত্মিকতার গান রচনা সবার কাজ নয়। সঙ্গীত আসলেই এতো সহজ ব্যাপার না। এটা যারাই শোয়েব চৌধুরীর গান শুনবে, তারা বুঝবে। আমি ওর অনেক গান গেয়েছি। এরমধ্যে একটা গানের উল্লেখ করবো – কাঁচা বাঁশের নয়া পালকি / নতুন জামা নতুন ঘর / এই দুনিয়ার রং তামাশা/ হইবো রে তোর পর / বুকে যখন ছিলো বাত্তি / তখন তো হুঁশ ছিলো না / মাটির দেহ মাটির টানে / ছিলোরে ফানা। একবার ভাবুন এই গানের গভীরতা! আর এটার যে সুর শোয়েব চৌধুরী করেছে, সেটা কণ্ঠে ধরনের মতো যোগ্যতা অনেক শিল্পীরই নেই। আমি বলবো, শোয়েব চৌধুরী হচ্ছে আমাদের সঙ্গীতের জগতের এক অমূল্য রত্ন।’

শোয়েব চৌধুরীর গানের কথা ও সুর সম্পর্কে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত ব্যাক্তিত্ব ও জীবন্ত কিংবদন্তী মিল্টন খন্দকার বলেন, ‘আমাদের গানের কথা ও সুরের যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শোয়েব চৌধুরীর গানের শুরু। স্রষ্টার এ এক অনন্য সাধারণ উপহার। একদিন আমরা সবাই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবো, কিন্তু শোয়েব চৌধুরীর গান টিকে থাকবে যুগের পর যুগ। একদিন এই সমাজ উপলব্ধি করবে, কী এক অমূল্য রত্নকে অবহেলা করেছে সবাই।’

সর্বশেষ