১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি বরিশাল সরকারি মডেল স্কুলের ২১ শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবার

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের একটি আদেশে প্রতিষ্ঠানটির ২১ শিক্ষক ও কর্মচারীদের পরিবারে হতাশা ও হাহাকার। প্রায় আড়াই মাস যাবৎ অধ্যক্ষ কর্মস্থলে না থাকায় কোন প্রতিকার না পেয়ে অমানবিক আদেশ প্রত্যাহারের জন্য ২১ জন পৃথক পৃথক আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনারের নিকট। ১৭ মে বৈশ্বিক মহামারি করোনা চলাকালীন সময়ে নিয়মিত বেতন প্রদান শিরোনামে তারা আবেদন করেন।
সভাপতি বরাবরে খন্ডকালীন ১৩ শিক্ষক স্বাক্ষরিত আবেদনে উল্লেখ করা হয় আমরা বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত আছি। বর্তমান সময় গোটা বিশ্ব করোনা ভাইরাস নামক এক ভয়ংকর মহামারির কবলে।। যেখানে দীর্ঘ মৃত্যুর মিছিল ও ঘরবন্ধি মানুষ অসহায় বাবে জিবন যাপন করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও প্রশাসন নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধিনমন্ত্রী পরিস্কার নির্দেশনা দিয়েছেন যে,সকল প্রতিষ্ঠানকে তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন ভাতা প্রদান করতে। সেখানে আমাদেরকে মে’২০২০ সাল থেকে বেতন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়। অথচ প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী শিক্ষক ও কর্মচারিরা বেতন পাবেন নিয়মিত। স্থায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীরা ঈদে বেতন বোনাস সহ অর্ধ লাখ থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছে। সেখানে খন্ডকালীন ও আমন্ত্রিত শিক্ষকদের মাত্র মাসিক আট হাজার টাকা বন্ধের স্বিদ্ধান্ত দেয়া একটি অমানবিক স্বিদ্ধান্ত। আবেদনকারী শিক্ষকদের এই আট হাজার টাকা ছাড়া অন্য কোন আয়ের উতৎ নেই।বর্তমানে এ বেতন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুদর্শায় ও না খেয়ে দিন যাপন করতে হবে বরে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। সকল প্রেক্ষাপট, পরিবার ও পরিজনদেরকথা বিবেচনায় বেতন নিয়মিত প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সভাপতির নিকট আবেদন করেন।

এদিকে ১৭’মে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনারের নিকট প্রতিষ্ঠানটির খন্ডকালীন আট কর্মচারী স্বাক্ষরিত পৃথক একটি আবেদন করেন। আবেদনে তারা খন্ডকালীন শিক্ষকদের ন্যায় তাদের বেতন নিয়মিত প্রদানের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন।

বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এমন সিদ্ধান্তে ২১ পরিবারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও একঘুয়েমির কারনে এসব হচ্ছে। কিভাবে একজন দ্বায়িত্বশীল লোক আড়াই মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন। মার্চের ২০ তারিখ কর্মস্থল ত্যাগ করে ২ জুন সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানে এসেছেন। খন্ডকালীন ঐ শিক্ষকরা বলেন, কিছু বলার নেই বললে খন্ডকালীন কর্মটি হারাতে হবে। তারা অধ্যক্ষের অমানবিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,গত ঈদে খন্ডকালীন ও আমন্ত্রিত শিক্ষক ও কর্মচারীদের ঈদ বোনাস দেয়নি যা দুঃখজনক। তারা বলেন প্রতিষ্ঠানটিতে স্থায়ীরা ক্লাশ কম নেন। খন্ডকালীন ও আমন্ত্রিত শিক্ষকরা অতিরিক্ত ক্লাশ নেন। অথচ এই করোনার মহামারিতে আমাদের বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি যা গভর্নিং বডি বা একাডেমিক কাউন্সিলের কেউ কিছু জানেন না।
খন্ডকালীন শিক্ষকদের বেতন বন্ধের ব্যাপারে সহকারি শিক্ষক (গনিত) মোঃ আজিম উদ্দিন জানান,এপ্রিলের বেতন যখন দেয়া হয় তখন মে মাস থেকে আমাদের বেতন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়। আমরা আমন্ত্রিত ও খন্ডকালীন শিক্ষকরা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নিকট আবেদন করেছি নিয়মিত বেতন প্রদানের জন্য। তিনি বলেন, অধ্যক্ষের নির্দেশে আমির হোসেন আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। একই কথা বললেন সহকারি শিক্ষক (গনিত) মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন আমাদের মাত্র সামান্য টাকা বেতন তা বন্ধের সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক।

এব্যাপারে অফিস সহকারি মোঃ রাশেদুজ্জামান জানান, আমরা খন্ডকালীন আট কর্মচারি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নিকট আবেদন করেছি নিয়মিত বেতন প্রদানের জন্য। আমাদের বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত অমানবিক। বেতন না পেলে আমরা কিভাবে চলবো কি খাবো।

সর্বশেষ