রাজধানীর মিরপুরে স্কুলছাত্র সিয়ামকে অপহরণ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকাল ১০ টায় পুলিশ মিরপুরের শাহ আলী প্লাজা মার্কেটের ১২ তলার সিঁড়ি থেকে সিয়ামের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, সিয়ামকে ডিশ লাইনের তার দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সিয়ামের সৎ বাবার সৎ ভাই রনি (৩৫), তার বন্ধু পলক (৩৫)সহ ৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নিহত সিয়াম মিরপুর বাংলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের ৫৫/৫৬ নম্বর বাড়িটি সিয়ামদের। তার মায়ের নাম রুপা বেগম। সৎ বাবা প্রদীপ। সিয়াম জন্মসূত্রে ইটালির নাগরিক। তার বাবা আনোয়ার হোসেন বছর দশেক আগে ইটালিতে মারা যায়। এক বছর পর সিয়ামের মা রুপা বেগম দেশে ফিরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রুপা বেগমের চাচাতো ভাই ছবির মিয়া সাব্বির বলেন, বুধবার বিকালে সিয়াম তার বাড়ির সামনে ক্রিকেট খেলছিল। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রনির বন্ধু পলক সিয়ামের ক্রিকেটের ব্যাট ভেঙে ফেলে। তখন সিয়ামকে নতুন একটা ব্যাট কিনে দেওয়ার কথা বলে শাহ আলী প্লাজা মার্কেটে নিয়ে যায়। ওই মার্কেটের ১২ তলায় কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে গিয়ে একটি কক্ষে সিয়ামকে আটকে রাখে। পরে রনি সিয়ামের মার কাছে ফোন দিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় সিয়াম চিৎকার চেঁচামেচি করলে তারা তাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে ডিশ লাইনের তার দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই দিন রাতে সিয়ামের মা মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন।
মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের দুইদিন আগে অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর শিশুটি নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা রুপা বেগম মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা জানায়, শাহআলী প্লাজা মার্কেটের ১২ তলার সিঁড়িতে শিশুটির লাশ ফেলে রেখেছে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সৈয়দ মো. আখতার হোসেন বলেন, নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা জিডির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করছিল। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই অপহৃত স্কুল ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।