২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৃত্যূশয্যায় রাহাত ! সুজনের দুই সহযোগী গ্রেফতার, হার্ডলাইনে বন্দরথানা পুলিশ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী:  বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ কর্মী রাহাত এখন মৃত্যূ শয্যায়। ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের বিছানায় এখন মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। সাথে থাকা স্বজনরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়েছে। সব রিপোর্ট এখনো পাইনি। রিপোর্ট দেখার পরে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত দিবেন। সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যারাতে সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়ার মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন এবং রাহাত নামে ছাত্রলীগ নেতার অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রাহাতসহ উভয়গ্রুপের নেতাকর্মীরা আহত হলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। 

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এই রাহাত এক সময়ে সুজনের অনুসারী ছিলেন। সম্প্রতিকালে তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যার কিছুটা পরে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন মোল্লাবাড়ি এলাকায় অবস্থান করলে সেখানে রাহাত তার টাকার বিষয়ে সুজনকে বলে। এ নিয়ে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয়। পরে সংঘর্ষে রাহাত গুরুতর আহত হয়ে পড়লে উদ্ধার করে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিটিস্ক্যানের পরে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা।

এদিকে রাতেই বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে রাহাতের বাবা খবির ডাক্তার ছাত্রলীগ নেতা সুজনসহ অন্তত ২৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার এর নেতৃত্বে অভিযানে রাতেই  সুজনের ২ অনুসারী রবিন ও মেহেদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে সুজনের দাবি, এক সময়ের অনুসারী রাহাতকে তিনি মারধর করেনি। বরং রাহাত অন্তত ২০/৩০ জনকে নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়েছে। এসময় তার কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে রাহাতের লোকজনের সাথে সংঘর্ষ হয় এবং এতে তার ৫/৭ জন কর্মীসহ রাহত আহত হয়।

এদিকে রাহাতের বাবা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুজনের স্বজন তুহিনের কাছে রাহাত কয়েক লাখ টাকা পাবে। সেই টাকা চাইতে গেলে সুজন কর্মীদের নিয়ে হামলা করে। ছেলেকে মারধর করাসহ হাতুড়িপেটা করে রক্তাক্ত করেছে।

তবে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাহাতের সঙ্গে ভোলার তুহিনের লেনদেন আছে। রাহাতের কাছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা পায় তুহিন। তুহিন ও তার ছোটভাই ছাত্রলীগের শুভ এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করে। এরপর রাহাত ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে নানা পোস্ট দিতে থাকেন। রাহাত বন্ধু এবং একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় তাকে ফেসবুকে মিথ্যাচার করতে নিষেধ করা হয়েছিল, কিন্তু শোনেনি।

ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ করেন, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি বাসার সামনে মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে মোটরসাইকেলের ওপর বসে কর্মীদের সাথে খোশগল্প করছিলেন, এমন সময় রাহাত কর্মীদের নিয়ে এসে হামলা করে। এতে তিনি বেঁচে গেলেও ৫/৭ কর্মী গুরুতর আহত হন। এবং রাহাত নিজের হাতের লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছে। কিন্তু আইনি সুবিধা পেতে এখন হামলার অভিযোগ করছে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগ সম্পাদক সুজনও আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, রাতে সংঘাতের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এবং রাহাতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সুজনসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই মামলায় সুজনের ২ অনুসারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

সুজনের ওপর হামলা হয়েছে, এই প্রসঙ্গে ওসি বলেন, অভিযোগ পেলে সেটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ