মুহাম্মাদ আবু মুসা :
গোলাবাড়ী তরনীরহাট সড়কে পাকা কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্য স্থানে ছোট বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটির উপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যে কারনে জনসাধারণের পোয়াতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এই সড়কটি দ্রুত পুনঃ নির্মাণ বা মেরামত করা না হলে পূর্ব বগুড়ার মানুষ শহরের সাথে যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
জানা গেছে, বগুড়া জেলা সদর থেকে গাবতলী উপজেলার সীমানায় গোলাবাড়ী তরনীরহাট সড়ক। গাবতলী উপজেলার মধ্যে এই সড়কের গোলাবাড়ী বন্দর ব্যবসায়ী কেন্দ্রস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাছাড়া এই সড়কের সাথে আরো বেশ কয়েকটি বন্দর ও হাট বাজারের সর্ম্পক রয়েছে। এ গুলো থেকে প্রতি বছর সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। বগুড়া-গোলাবাড়ী তরনীরহাট সড়কে রয়েছে হাট-বাজার, বন্দরে মাছের আড়ৎ থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি চাতালসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কয়েকটি ব্যাংক, বীমা, এনজিওসহ সরকারী বেসরকারী অনেক অফিসও রয়েছে। এই সড়কটির উপর দিয়ে প্রতিদিনই লাখো মানুষ শতশত যানবাহন নিয়ে চলাচল করে। নানা ধরনের যানবাহন ও পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে থাকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী, অফিসগামীসহ লাখো মানুষ। প্রায় ২২কিলো মিটার বগুড়া-গোলাবাড়ী তরনীরহাট সড়কে শহরের চেলেপাড়া থেকে গাবতলীর পাকার মাথা পর্যন্ত প্রায় ৮কিলো মিটার সড়ক রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায়। এখানে প্রায় এক/দেড় কিলো মিটার পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। প্রায় ৭কিলো মিটার সড়কের বেহাল অবস্থাই রয়েছে। অপর দিকে গাবতলীর পাকার মাথা থেকে গোলাবাড়ী তরনীরহাট পর্যন্ত প্রায় ১৪কিলো মিটার সড়ক রয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর আওতায়। এই সড়কে কোন কাজ না হওয়ায় সম্পূর্ণ সড়কটির বেহাল অবস্থা রয়েছে। এক কথায় প্রায় ২২কিলো মিটার ওই সড়কের এলজিইডি থেকে শুধু এক/দেড় কিলো মিটার কাজ করা হয়েছে। প্রায় ২২কিলো মিটার বগুড়া-গোলাবাড়ী তরনীরহাট সড়কটির পাকা কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্যস্থানে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় দেখে মনে হবে এটি কোন সড়ক নয়, মাছ চাষ করা ডোবা অথবা পতিত পড়া সড়ক। এ কারনে প্রতিদিন ছোট খাট দুর্ঘটনা লেগেই আছে। আবার সড়কে সৃষ্টি হওয়া গর্তে ময়লা পানি জমে থাকায় যানবাহনের চাকায় পানি ছিটকে মানুষের শরীরে লেগে কাপড় চোপড় নষ্ট হওয়ায় ঝগড়া বিবাদও সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া আরো নানা সমস্যা হওয়ার কারনে জনসাধারণের পোয়াতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। তাই দ্রুত সড়কটি নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি ও ব্যবসায়ী মহল। এ বিষয়ে গোলাবাড়ী বন্দরের সার ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম মোল্লা’র সাথে কথা বললে তিনি জানান, ব্যস্থতম সড়কটির পাকা কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্যস্থানে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় মানুষ অতি কষ্টে চলাচল করছে। তিনি (আঃ রহিম) দ্রুত কাজটি করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গোলাবাড়ী বন্দরের আব্দুল মজিদ মন্ডল ও লুৎফর রহমান সরকার স্বপন জানান, সড়কটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ীসহ সর্বশ্রেনীর মানুষ অতি কষ্ট করে যাতায়াত বা চলাচল করছে। ফলে সড়কটির দ্রুত পুনঃনির্মাণ বা মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানান। তরনীরহাট এলাকার শাহনেওয়াজ জাকি, হাবিবুর রহমান রিপন সড়কটির দ্রুত পুনঃ নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বগুড়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ওই সড়কটি আমাদের সওজ এবং এলজিইডি’র যৌথভাবে রয়েছে। সড়কটির অবস্থা খারাপ হওয়ার বিষয় আমাদের জানা থাকলেও আপাতত বরাদ্দ না থাকায় পুনঃনির্মাণ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যে গুলো স্থানে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেই স্থানে মেরামত করা হবে। এই মেরামত কাজের জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। যা অল্প দিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে ইনশাআল্লাহ। বগুড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ওই সড়কটির কিছু অংশ আমাদের রয়েছে তা পুনঃ নির্মাণ করা না গেলেও আপনার মাধ্যমে জানতে পেয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া স্থান গুলোতে মেরামত করা হবে। তাছাড়া সড়কটি পুনঃ নির্মাণ করার বিষয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হবে।