১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রিয়াদে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বাণী ডেস্ক: সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ দূতাবাসে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর রিয়াদস্থ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুলের পক্ষ থেকে ও বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে আজ এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন পেশার অভিবাসীরা, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি শাখা ও জাতীয় কারিকুলামের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম(বার) বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান অপরিসীম। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে তিনি দেশের ক্রান্তিলগ্নে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন,তিনি শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙ্গালির মুক্তিসংগ্রামের ও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। আন্দোলনের উত্তাল সময়গুলোতে নিজ বাড়িতে পরম মমতায় নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের আপ্যায়ন করতেন, সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে ব্যবস্থা নিতেন। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে যখন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তির কথা বললেন, তখন বঙ্গমাতা দৃঢ়ভাবে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে এই সময়োচিত সিদ্ধান্ত আইয়ুব খানকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিল।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দেয়ার আগে বঙ্গমাতা জাতির পিতাকে হৃদয়ের কথা বলার পরামর্শ প্রদান করেছিলেন, সেদিন তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, তোমার মনে যা আসবে তাই তুমি বলবা। কারও কোনো পরামর্শ দরকার নেই। তুমি মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করো, কাজেই কী বলতে হবে তুমি জানো। রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ঐতিহাসিক ভাষণের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন বঙ্গমাতা। যার পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত।
বঙ্গমাতা ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সীমাহীন সাহস ও ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। নিজের দুই সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর ত্যাগ, আদর্শ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রদূত দেশ ও জাতির প্রতি বঙ্গমাতার অবদানকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল জাতীয় কারিকুলামের শিক্ষার্থী ফাতেমা জান্নাত লুবাবা ও রাহমা সুলতানা তন্বী এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি শাখার শিক্ষার্থী সুবহা আজাদ ও রোজানা মারিয়াম বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সংগ্রামী জীবনের ওপর বক্তব্য প্রদান করে। অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ অভিবাসীদের মধ্যে সাহিত্যিক কবি শাহজাহান চঞ্চল, ব্যবসায়ী এম আর মাহাবুব, বঙ্গমাতার জীবনের ওপর বক্তব্য প্রদান করেন। দূতাবাসের প্রথম সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জীবনীর ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দেশ ও জাতির সার্বিক মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়।

সর্বশেষ