আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি :: শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বন্ধ হয়ে গেছে বরগুনার আমতলী সরকারি কলেজের এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা। অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
আমতলী সরকারি কলেজে একাদশ, দ্বাদশ ও স্নাতক শ্রেণিতে দুই হাজার সাতশ’ শিক্ষার্থী রয়েছেন। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। গেলো ১৫ অক্টোবর একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার নামে এক হাজার দুই শত আশি টাকা আদায় করেন। ওই পরীক্ষা গত ২৮ অক্টোবর শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা এত টাকা দিতে আপত্তি করলেও অধ্যক্ষ তা আমলে নেয়নি। উপরন্তু পরীক্ষায় ফি না দিলে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণের অনুমতি দিবে না বলে হুমকি দেন। কিন্তু ওই পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক মাসের মাথায় আগামী ২৯ নভেম্বর প্রাক বাৎসরিক পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে পরীক্ষায় বেতনসহ বিভিন্ন ফি বাবদ এক হাজার দুইশ’ পয়ষট্টি টাকা ধার্য করেন। করোনার মধ্যে শিক্ষার্থীরা এতো টাকা দিতে অস্বীকার করলে গতকাল রোববার কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাদানুবাদ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
আজ সোমবার কলেজের অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদে কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভের তোপের মুখে অধ্যক্ষ পরীক্ষা স্থগিত করে তার অফিস কক্ষ ত্যাগ করেন।
করোনার কারণে কোনও ফরমাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে। ওই পরিপত্রে উল্লেখ আছে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্টের নামে অর্থ আদায় করতে পারবে না। অর্থ আদায় করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের এ পরিপত্র আমতলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ না মেনে উল্টো পরিপত্র নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করছেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান বলেন, পরীক্ষা আপাদত বন্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষার ফি ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ছাড়া অন্য কোনও অর্থ আদায় করা হচ্ছে না। যারা বেতন দেয়নি তাদের কাছ থেকে শুধু মাত্র বেতন নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা সমুদয় টাকা কলেজের ব্যাংক হিসেবে জমা হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনুসকে অবহিত করলে তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
এদিকে পরীক্ষার নামে এ্যাসাইনমেন্টে গলাকাটা ফি আদায় করায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং আমতলীর নাগরিক সমাজ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।