বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামকে বিতর্কিত উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। তারা কারিকুলামে ‘ইসলামবিরোধী’ বিষয় বাদ দিয়ে নতুন করে প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে।
আজ শুক্রবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নতুন পাঠ্যপুস্তকে বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
ফোরামের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ বাতিল করা, যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক ও দ্বীনদার শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত করা, পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত ও ইসলামবিরোধী বিষয় বাদ দেওয়া, শিক্ষকদের স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতনকাঠামো এবং শিক্ষক সুরক্ষা আইন, ট্রান্সজেন্ডার বিষয় পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, তাঁদের দাবি ছিল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার। কিন্তু সরকার তা শোনেনি। দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে আগ্রাসনের কালো থাবা এগিয়ে আসছে। এই সরকার ইসলামের দুশমনদের অর্থ দিয়ে লালন-পালন করছে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. নাছির উদ্দিন খান বলেন, সবার মেধা ও প্রতিভা কখনোই এক হবে না। কিন্তু সরকার তা বিবেচনা না করে বাধ্যতামূলকভাবে সব ছাত্রছাত্রীকে একমুখী মডেলে তৈরি করতে চায়। শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১–এ সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, কম মেধাবী ছাত্রের কথা বিবেচনা করে পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে, যা বিজ্ঞান বই দেখলেই বোঝা যাবে। এতে মেধার বিকাশ ঘটবে না। ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। জাতি হিসেবে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, নতুন শিক্ষা কমিশন গঠনের ঘোষণা সময়ের দাবি। স্বাধীনতা রক্ষা করতে চাইলে রক্ত দিয়ে এ সরকারকে উৎখাত করতে হবে।
শিক্ষা কারিকুলামের সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আ খ ম ইউনুস বলেন, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে হাবুডুবু যারা খেয়ে বেড়ে উঠেছে, তারাই এই কারিকুলাম তৈরি করেছে।
গোলটেবিলে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম।